Home Second Lead বিএসএএ নির্বাচন: প্রার্থী সংকটে সম্মিলিত পরিষদ, নেতৃত্বে চ্যালেঞ্জের ইঙ্গিত

বিএসএএ নির্বাচন: প্রার্থী সংকটে সম্মিলিত পরিষদ, নেতৃত্বে চ্যালেঞ্জের ইঙ্গিত

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশন (বিএসএএ)-এর আসন্ন নির্বাচন ঘিরে শিপিং সার্কেলে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে। টানা দুই মেয়াদ ক্ষমতায় থাকা ক্ষমতাধর প্যানেল সম্মিলিত পরিষদ এবার প্রার্থী সংকটে পড়েছে, যা তাদের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবশালী অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

প্রার্থী সংকটের বাস্তবতা

রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। সূত্র বলছে, সম্মিলিত পরিষদ চেয়ারম্যান ও সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী দিতে পারলেও ভাইস-চেয়ারম্যান পদে একজনকেই দাঁড় করাতে পেরেছে। সবচেয়ে বড় সংকট দেখা দিয়েছে পরিচালনা পর্ষদে—১৯টি পদের বিপরীতে মাত্র ৫ জন প্রার্থী দিতে সক্ষম হয়েছে তারা। অথচ প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠী সব পদেই অতিরিক্ত প্রার্থী দিয়েছে। এই চিত্র পরিষ্কার করছে যে, দীর্ঘদিনের প্রভাবশালী একটি প্যানেল এখন সংগঠনের ভেতরেই জনবল সংকটে পড়েছে।

কেন এমন পরিস্থিতি?

এ সংকটের পেছনে কয়েকটি কারণ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। প্রথমত, নতুন বাণিজ্য সংগঠন অধ্যাদেশ কার্যকর হওয়ায় ভোটার তালিকায় বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। ফলে সম্মিলিত পরিষদের অনেক অভিজ্ঞ  দক্ষ প্রার্থী বাদ পড়ে যায়। দ্বিতীয়ত, তাদের ওপর অভিযোগ রয়েছে, বারবার একই ব্যক্তিকে প্রার্থী করে রাখার কারণে সংগঠনের ভেতরে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। সমালোচকদের মতে, এই “চিরস্থায়ী নেতৃত্ব” সদস্যদের মধ্যে ক্লান্তি ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে।

প্রতিদ্বন্দ্বীদের শক্তি ও দুর্বলতা

সম্মিলিত পরিষদের প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠী সংখ্যার দিক থেকে এগিয়ে থাকলেও তাদের বড় সীমাবদ্ধতা দক্ষ নেতৃত্বের অভাব। অনেকেই বলছেন, অধিক প্রার্থী দিলেই সংগঠনকে দক্ষ হাতে চালানো সম্ভব নয়। তাই শুধু প্রার্থীর সংখ্যা নয়, যোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতাই নির্ধারণ করবে নির্বাচনের ফলাফল।

সমঝোতার ব্যর্থতা ও রাজনৈতিক প্রভাব

এই নির্বাচনকে ঘিরে একাধিকবার সমঝোতার মাধ্যমে বোর্ড গঠনের চেষ্টা হয়েছিল। বিশেষ করে প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠী দাবি তুলেছিল বিতর্কিত নেতাদের বাদ দিয়ে নতুন নেতৃত্ব আনার। কিন্তু সম্মিলিত পরিষদের কঠোর অবস্থান সমঝোতার পথ রুদ্ধ করে দেয়। রাজনৈতিক ছায়া ও কৌশলগত টানাপোড়েনের কারণে নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বর্তমান বোর্ডের মেয়াদ বাড়ায়। এর ফলে সম্মিলিত পরিষদের সুপরিকল্পিত মাঠ একেবারে ভেঙে পড়ে।

সামনের দিনগুলো

আগামী ৯ অক্টোবরের ভোটকে ঘিরে এখন শিপিং সার্কেলে মূল প্রশ্ন—সংগঠনের অভিজ্ঞ নেতৃত্ব হারিয়ে কি অস্থিতিশীলতা বাড়বে, নাকি নতুন নেতৃত্ব শিপিং এজেন্টদের স্বার্থ রক্ষায় সক্ষম হবে? সম্মিলিত পরিষদ তাদের নেতৃত্ব ধরে রাখতে পারলেও পরিচালনা পর্ষদে সংকট তাদের অবস্থান দুর্বল করতে পারে। অপরদিকে, প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠী সংখ্যাগত সুবিধা কাজে লাগাতে পারলেও নেতৃত্বের দক্ষতার অভাবে তাদেরও ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।

সব মিলিয়ে, এবারের বিএসএএ নির্বাচন শুধু প্রার্থী তালিকার প্রতিযোগিতা নয়; বরং এটি হয়ে উঠছে সংগঠনের ভেতরকার আস্থা, যোগ্য নেতৃত্ব এবং স্বার্থরক্ষার লড়াই।