Home বিনোদন পঞ্চাশের পরে বিশের প্রেমে জীবনের নতুন মানে খুঁজে পাওয়া এক নারী

পঞ্চাশের পরে বিশের প্রেমে জীবনের নতুন মানে খুঁজে পাওয়া এক নারী


বিনোদন ডেস্ক:

বিয়ে বিচ্ছেদের পর প্রেমে পড়া ছিল তার কল্পনারও বাইরে। তাও আবার এমন একজনের সঙ্গে, যার বয়স তার চেয়ে ২৫ বছর কম। কিন্তু এই অপ্রত্যাশিত সম্পর্কই জীবন বদলে দিয়েছে ব্রিটিশ সাবেক বিউটি সম্পাদক শার্লট অ্যান ফিডলারের। পঞ্চাশোর্ধ বয়সে এসে একজন বিশের দশকের তরুণকে ভালোবেসে তিনি শুধু সম্পর্কের অর্থই নতুন করে বুঝেছেন না, নিজের অস্তিত্বকেও যেন নতুনভাবে অনুভব করতে শিখেছেন।

শার্লটের জীবন একসময় ছিল অত্যন্ত ব্যস্ত ও গ্ল্যামারসে ভরপুর। ব্রিটিশ ‘ভোগ’, ‘এলে’ ও ‘মেরি ক্লেয়ার’-এর মতো সাময়িকীতে কাজ করার পর তিনি হন ‘গ্ল্যামার’-এর ইউকে ও ইউএস সংস্করণের ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর। সেই সময়টায় স্বামীর সঙ্গে দাম্পত্য জীবনে যেমন স্থিতি ছিল, তেমনি পেশাগত অর্জনেও ছিল ঈর্ষণীয় সাফল্য। কিন্তু স্বামীর ছয় বছরের গোপন পরকীয়া সম্পর্ক শার্লটের জীবনে নেমে আনে অভাবনীয় ঝড়। বিচ্ছেদের পর, একা হাতে কন্যা সন্তানদের বড় করার পাশাপাশি আর্থিক নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জও ছিল।

এই কঠিন সময়েই তিনি শুরু করেন নিজের উদ্যোগ‘স্পটস অ্যান্ড স্ট্রাইপস’ নামে কিশোর-কিশোরীদের জন্য স্কিনকেয়ার ব্র্যান্ড। পেশাগত ব্যস্ততার মাঝেও তিনি বিশ্বাস করেছিলেন, প্রেম আর কখনও জীবনে ফিরে আসবে না। তবে ২০২০ সালের এক সন্ধ্যায় এক ডেটিং অ্যাপে পরিচয় হয় এক তরুণ পশু চিকিৎসকের সঙ্গে। তার নাম ভি (V)। বয়সে ছোট হলেও ভি-র গভীর চোখ, সংবেদনশীলতা আর জীবনবোধ শার্লটকে আকর্ষণ করে।

প্রথম দেখা হয় বাথ শহরে। কোনো গ্ল্যামার নেই, কোনো নাটকীয়তা নয় তবে ছিল অকৃত্রিম আকর্ষণ। সেই রাতেই তারা শহরের রাজকীয় ক্রিসেন্টের পাশে দাঁড়িয়ে চুমু খেয়েছিলেন। একদম কিশোর বয়সের মতো উচ্ছ্বাস নিয়ে শার্লট ফিরে এসেছিলেন নিজের গ্রামে।

প্রেমটা কিন্তু শুধু দেহজ নয়। বরং সেই সম্পর্ক তাকে শিখিয়েছে কীভাবে আবার নিজের শরীরকে ভালোবাসতে হয়। ভি তাকে বারবার বলেছে, “ভাবো না, অনুভব করো।” এই অনুভবের জায়গা থেকেই শুরু হয় এক নতুন অধ্যায়—যেখানে বয়স, সামাজিক নিয়ম কিংবা চেনা জীবনের সীমারেখা কোনো বাধাই নয়।

এই সম্পর্ক নিয়ে চারপাশে নানা প্রশ্ন থাকলেও শার্লট জানেন, তারা দুজন পরস্পরকে পূর্ণতা দেন। ভি নিজে একটি ভালো চাকরিতে আছে, ব্যয়বহুল জীবনের প্রয়োজন নেই তাদের। বরং তারা ছুটির দিন কাটায় প্রকৃতির মাঝে—খোলা মাঠে হাঁটেন, রান্না করেন, আর একে অপরের চোখে নিজেরে খুঁজে পান।

চার বছর পেরিয়েও এই সম্পর্ক অটুট। জন্মদিনে ভি শার্লটকে তার বয়সের সংখ্যার সমান গোলাপ ফুল উপহার দেয়, কখনও দেয় ঘাস কাটার মেশিন—প্রেম যেখানে ফুল, রোদ, ঘাস আর চোখের গভীরে সঞ্চিত স্নেহ।

শার্লটের এই গল্প হয়তো সমাজের প্রচলিত ধারণাকে নাড়িয়ে দেয়, কিন্তু প্রেমের বয়স হয় না—এই সত্যিটা যেন আরও একবার স্পষ্ট হয়ে ওঠে তার জীবন থেকে।