বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পেছনে জড়িত সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের তৎকালীন সচিবদের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক শেষে তিনি এ নির্দেশ দেন। বৈঠকে কমিশনের সদস্যরা একমত হন যে, অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনগুলোর দায়-দায়িত্ব নিরূপণ এবং সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা জরুরি।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন এবং ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। এছাড়া প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও বিশেষ সহকারী মনির হায়দারও বৈঠকে অংশ নেন।
কমিশনের সদস্যরা বৈঠকে ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়নের সর্বশেষ অগ্রগতি তুলে ধরেন। এ প্রসঙ্গে সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, ‘‘বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ইতোমধ্যেই ঐকমত্য হয়েছে। সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে খুব শিগগিরই একটি চূড়ান্ত খসড়া জাতির সামনে উপস্থাপন করা সম্ভব হবে।’’
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘‘সবার চোখ এখন জুলাই সনদের দিকেই। আমি আশা করি আগামী জুলাইয়ের মধ্যেই জাতিকে একটি স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য রাজনৈতিক রূপরেখা দিতে পারব।’’
লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি জানান, সেখানে প্রবাসী বাংলাদেশিরা নির্বাচনী সংস্কার নিয়ে প্রবল আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। শিক্ষার্থী থেকে কমিউনিটির অভিভাবক—সবাই জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন।
‘‘প্রবাসীদের প্রধান প্রশ্ন ছিল—আমরা কি আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব? আমরা তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে চাই। পোস্টাল ব্যালটসহ সম্ভাব্য সব পন্থা বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে,’’ বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার সংক্রান্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘‘সব রাজনৈতিক দলই একমত যে, আগের তিনটি জাতীয় নির্বাচনে যে অনিয়ম হয়েছে, সেসবের পেছনে যাঁরা দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। তদন্ত কমিটি গঠনই এর প্রথম ধাপ।’’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বর্তমানে একটি নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনী ব্যবস্থা গঠনের লক্ষ্যে কাজ করছে। জুলাই সনদের মাধ্যমে সেই প্রচেষ্টা এক নতুন মাত্রায় পৌঁছাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
