বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, আনোয়ারা ( চট্টগ্রাম ): বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মোহাম্মদ ইমন (২০) নামের এক যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জুঁইদণ্ডী ইউনিয়নের দক্ষিণ খুরুস্কুল গ্রামের সিকদার বাড়িতে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
মোহাম্মদ ইমন ওই এলাকার মোহাম্মদ ইদ্রিচের ছেলে। পরিবারের পাশে দাঁড়াতে তিনি নিজ বাড়ির পোল্ট্রি খামারে কাজ করতেন।
পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে, দুপুরে এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। সেই সময় খামারের একটি ত্রুটিপূর্ণ বৈদ্যুতিক সংযোগ নিজেই মেরামত করছিলেন ইমন। ঠিক এমন সময় হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে আসে, আর অসাবধানতাবশত খোলা তারে জড়িয়ে তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। সাথে সাথেই তাকে উদ্ধার করে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ইমনের মৃত্যু হয়।
বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় কাজ কতটা বিপজ্জনক?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদ্যুৎ না থাকা অবস্থায় বৈদ্যুতিক লাইনে কাজ করা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর একটি। কারণ কোনও লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই মনে হলেও সেটি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত লাইনে স্পর্শ করাই উচিত নয়। বিদ্যুৎ সরবরাহ যেকোনো সময় চালু হতে পারে, এমনকি স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায়ও।
বিদ্যুৎ সংযোগে কাজ করার ক্ষেত্রে সাধারণ নিয়ম হচ্ছে, লাইনে সুরক্ষিত টেস্টিং মিটার ব্যবহার করে দেখতে হবে লাইনটিতে বিদ্যুৎ আছে কি না। বিদ্যুৎ বন্ধ থাকলে সেটাও টেস্টিং ডিভাইসের মাধ্যমেই নিশ্চিত হতে হয়। শুধু বিদ্যুৎ চলে গেছে ভেবে কাজ শুরু করা আত্মঘাতী হতে পারে।
পল্লী বিদ্যুৎ বা সরকারি বিদ্যুৎ বিভাগের কোনো অনুমোদন ও প্রশিক্ষণ না থাকলে সাধারণ নাগরিকদের কখনোই নিজ দায়িত্বে বৈদ্যুতিক লাইন মেরামত না করার পরামর্শ দিয়েছেন বিদ্যুৎ নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।
মোহাম্মদ ইমনের অকাল মৃত্যু কেবল একটি দুর্ঘটনা নয়, এটি একটি সতর্কবার্তা—বিদ্যুৎ নিয়ে অজ্ঞতা, অসাবধানতা কিংবা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস কীভাবে জীবন কেড়ে নিতে পারে, তারই বাস্তব উদাহরণ।