বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, নোয়াখালী: বেগমগঞ্জ উপজেলার মণ্ডলপাড়া এলাকার লোকনাথ মন্দিরসংলগ্ন একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে বিপন্ন প্রজাতির ৪২৫ কচ্ছপ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে এ অভিযান চালানো হয়।
বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের (ডব্লিউসিসিইউ) কাছে গোপন সূত্রে খবর আসে যে বাড়িটিতে অবৈধভাবে বিপুল সংখ্যক কচ্ছপ মজুদ রাখা হয়েছে। খবর পেয়ে ডব্লিউসিসিইউ’র একটি দল সেখানে পৌঁছালে পাচারকারীরা কচ্ছপ সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
ডব্লিউসিসিইউ’র পরিচালকের নেতৃত্বে তাৎক্ষণিক যৌথ অভিযান চালিয়ে তিন প্রজাতির মোট ৪২৫ কচ্ছপ উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে—
- ভারতীয় ছাতি কচ্ছপ (কড়ি কইট্টা)
- ভারতীয় ফ্ল্যাপশেল কচ্ছপ (সুন্ধি কইচ্ছা)
- ভারতীয় ময়ূর নরমখোলস কচ্ছপ (ধুম কইচ্ছা)
উদ্ধার হওয়া এই প্রজাতিগুলো বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২–এর প্রথম তফসিলভুক্ত সংরক্ষিত বন্যপ্রাণী।
আইন অনুযায়ী সংরক্ষিত বন্যপ্রাণী
২০১২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনের প্রথম তফসিলে এমন সব প্রাণীর তালিকা রয়েছে যাদের বিলুপ্তির ঝুঁকি রয়েছে এবং যারা সম্পূর্ণভাবে সংরক্ষিত। এর মধ্যে কচ্ছপ, কুমির, গাঙ্গেয় ডলফিন, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ও স্তন্যপায়ী প্রাণী অন্তর্ভুক্ত।
এই আইনের ধারা ৩৬ অনুযায়ী, তালিকাভুক্ত বন্যপ্রাণী হত্যা, শিকার, ধরা, বেচা-কেনা, পরিবহন বা বন্দী করে রাখা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কেউ এ আইন ভঙ্গ করলে সর্বোচ্চ ৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা হতে পারে।
অভিযানে উপকূলীয় বন বিভাগ, নোয়াখালী বিভাগীয় বন কর্মকর্তারা এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নোয়াখালী ওয়াইল্ডলাইফ অ্যান্ড অ্যানিম্যাল টিম অংশ নেয়।
ডব্লিউসিসিইউ’র বন্যপ্রাণী পরিদর্শক আশিম মালিক জানান, উদ্ধার হওয়া কচ্ছপের মধ্যে ৩২৫টি জীবিত এবং ১০০টি মৃত। জীবিত কচ্ছপগুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী উপযুক্ত জলাশয়ে অবমুক্ত করা হবে।
ডব্লিউসিসিইউ জানিয়েছে, বন্যপ্রাণী পাচার রোধে নিয়মিত অভিযানের মাধ্যমে কঠোর অবস্থান অব্যাহত থাকবে।