এভিয়েশন ডেস্ক: কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির উপকণ্ঠ মুইহোকো এলাকায় ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় ছয়জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে চারজন ছিলেন বিমানের যাত্রী, যারা চিকিৎসা সহায়তার দায়িত্বে থাকা মেডিক্যাল টিমের সদস্য। বাকি দুইজন ছিলেন দুর্ঘটনাস্থলের বাড়ির বাসিন্দা। এছাড়া অন্তত দুইজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বিমানটি এমআরএফ ফ্লাইং ডক্টরস নামে একটি আন্তর্জাতিক মেডিক্যাল এয়ার অ্যাম্বুলেন্স সেবা প্রদানকারী সংস্থার মালিকানাধীন। সেসনা সিটেশন এক্সএলএস মডেলের এই বিমানটি ৭ আগস্ট সকালে নাইরোবির উইলসন বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে সোমালিল্যান্ডের হার্গেইসা শহরের উদ্দেশে রওনা হয়। উড্ডয়নের মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে বিমানটির রেডিও ও রাডার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর এটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মুইহোকো এলাকার একটি দোতলা আবাসিক ভবনের ওপর আছড়ে পড়ে।
দুর্ঘটনার ফলে বাড়িটির একটি অংশ ধসে পড়ে এবং সেখানে বসবাসরত দুইজন ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিমানের নিচে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুন ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রাথমিকভাবে উদ্ধারকাজে অংশ নিলেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিস ও উদ্ধারকর্মীদের কয়েক ঘণ্টা সময় লেগে যায়।
কেনিয়া সিভিল এভিয়েশন অথরিটি (কেসিএএ) জানিয়েছে, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু হয়েছে। তারা নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেছে এবং আহতদের দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিতের আশ্বাস দিয়েছে। এমআরএফ ফ্লাইং ডক্টরস সংস্থাও এক বিবৃতিতে জানায়, তারা অভ্যন্তরীণ তদন্ত চালাবে এবং নিহতদের পরিবারকে আর্থিক ও মানবিক সহায়তা প্রদান করবে।
স্থানীয় বিশ্লেষকরা বলছেন, কেনিয়ার অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল তুলনামূলকভাবে নিরাপদ হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ছোট আকারের বেসরকারি বিমান ও চার্টার ফ্লাইটের দুর্ঘটনা বেড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিমানের রক্ষণাবেক্ষণ ও পাইলট প্রশিক্ষণে ঘাটতি, এবং প্রতিকূল আবহাওয়া—এসব বিষয় ছোট আকারের বিমানের দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ায়।
এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই বলেছেন, আবাসিক অঞ্চলের ওপর দিয়ে নিয়মিতভাবে ছোট বিমান ও হেলিকপ্টার চলাচল করায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যায়। সরকারের প্রতি তারা এই রুটের নিরাপত্তা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।