আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বাটারওয়ার্থ থেকে কুয়ালালামপুর-বিমান নয়, ট্রেনেই দ্রুত পৌঁছানো যায় বলে মনে করছেন মালয়েশিয়ার অনেক পেশাজীবী। সময় ও ঝক্কির হিসাব মিলিয়ে তাঁরা এখন বেশি আস্থা রাখছেন কেরেতাপি তানাহ মেলায়ু বেরহাদ (কেটিএমবি)-এর ইলেকট্রিক ট্রেন সার্ভিস (ইটিএস)-এর ওপর।
পেনাংয়ের ফেডারেশন অব মালয়েশিয়ান ম্যানুফ্যাকচারার্সের সাবেক চেয়ারম্যান দাতুক সেরি ওই ইং হক বলেন, ‘গাড়িতে করে এয়ারপোর্টে পৌঁছাতে সময় লাগে, আবার ফ্লাইটেও নিয়মিত দেরি হয়। এরপর শহরে ফের ঢুকতেও সময় লাগে। সব মিলিয়ে অনেক সময় নষ্ট হয়। এখন তাই আমরা ট্রেনেই যাই।’
তিনি জানান, গত পাঁচ বছর ধরে ব্যবসায়িক কাজে মাসে একাধিকবার কুয়ালালামপুর যাওয়া-আসায় তিনি ইটিএস ব্যবহার করছেন। তাঁর কথায়, ‘অনেক ব্যবসায়ী, এমনকি ভিআইপিকেও এখন ট্রেনে উঠতে দেখি। এতে বোঝা যায়, বিমানের তুলনায় ট্রেনের সুবিধা সবাই বুঝতে পারছে।’
কেএল সেন্ট্রাল থেকে বুকিত মেরতাজাম পর্যন্ত একবার এক্সপ্রেস ট্রেনে মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টায় পৌঁছেছেন বলেও জানান তিনি। সাধারণত চার ঘণ্টার ভ্রমণে ফিরতি ব্যবসা শ্রেণির টিকিটের মূল্য প্রায় ৩০০ রিঙ্গিত। তবে টিকিট দ্রুত বিক্রি হয়ে যাওয়ায় তিনি অনেক সময় সাধারণ শ্রেণির টিকিটেই যাতায়াত করেন।
তিনি বলেন, ‘আরও কোচ বাড়ানো দরকার, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সেবার মান উন্নত হওয়া উচিত। তবে খাবার ভালো লাগে।’
পেনাংয়ের মুসলিম জুয়েলার্স অ্যান্ড মানি চেঞ্জারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দাতুক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ফ্লাইটে গেলে সময় ম্যানেজ করা কঠিন হয়ে যায়, বিশেষ করে বাজেট এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট দেরিতে ছাড়ে। ট্রেনে এ সমস্যা নেই। তাই আমরাও এখন ট্রেনেই যাই।’
অন্যদিকে সিনিয়র ইনসুরেন্স কনসালট্যান্ট কালাইমোনি অরুমুগাম বলেন, ‘বিজনেস ক্লাসে কোট ঝোলানোর ব্যবস্থা আছে। অফিসিয়াল ড্রেস নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। ল্যাপটপে কাজ করতেও সুবিধা হয়, প্লেনের সিটে যে অস্বস্তি, সেটা নেই।’
এই চাহিদার ভিত্তিতেই কেটিএমবি বাটারওয়ার্থ স্টেশনে উদ্বোধন করেছে ‘রুবি লাউঞ্জ’। এখানে শুধু ব্যবসা শ্রেণির যাত্রীদের জন্য রয়েছে আরামদায়ক আসন ও চার্জিং পয়েন্টসহ বসার জায়গা।
কেটিএমবি-র ইটিএস ও ইন্টারসিটি সার্ভিসের জেনারেল ম্যানেজার নুরুল আজহা মোকমিন জানান, রুবি লাউঞ্জ ৪০ জন যাত্রীর জন্য তৈরি। অন্য যাত্রীরা ফ্যান যুক্ত সাধারণ ওয়েটিং এরিয়ায় অপেক্ষা করবেন।
তিনি আরও জানান, জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত বাটারওয়ার্থ ও কুয়ালালামপুর রুটে ৪৭০,৫০৮ জন যাত্রী ট্রেনে সফর করেছেন। এদের মধ্যে ৪২০,৬৫৩ জন সাধারণ শ্রেণিতে এবং ৪৯,৮৫৫ জন ব্যবসা শ্রেণিতে ভ্রমণ করেছেন।
স্কুল ছুটির এই মৌসুমে ২,৫০,০০০ টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে, যার মধ্যে ১,৩০,০০০ ইটিএস ও ১,২০,০০০ ইন্টারসিটি ট্রেনের। সংযোজন করা ১০,০৮০ অতিরিক্ত টিকিটও বিক্রি হয়ে গেছে।
নুরুল জানান, আগামী বছর যুক্ত হচ্ছে আরও ১০টি নতুন ইটিএস ট্রেন, যার মোট ব্যয় প্রায় ৪০০ মিলিয়ন রিঙ্গিত। এগুলো জেমাস–জোহর বারু ও জোহর বারু–বাটারওয়ার্থ–পাদাং বেসার রুটে চলবে।
🔁 আপনার ভ্রমণের পছন্দ কী—ট্রেন না প্লেন? মতামত জানান মন্তব্যে।
📤 খবরটি বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ বা টেলিগ্রামে।
📲 এমন আরও প্রতিবেদন পড়তে ভিজিট করুন: বিজনেসটুডে২৪.কম










