প্রাণীগুলো যাত্রীদের লাগেজে অত্যন্ত কৌশলে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। বিমানবন্দরের কাস্টমস হলে স্ক্যানিং এবং সন্দেহভাজন লাগেজ তল্লাশির সময় এসব প্রাণীর অস্তিত্ব ধরা পড়ে।
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টমস হলে বৃহস্পতিবার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযানে ২৩টি বিরল বিদেশি জীবিত প্রাণী জব্দ করেছে কাস্টমস হাউস, ঢাকা। উদ্ধারকৃত প্রাণীগুলোর মধ্যে রয়েছে গিরগিটি, সাপ, ব্যাঙ ও কচ্ছপ। অধিকাংশই বিলুপ্তপ্রায় ও আন্তর্জাতিকভাবে সংরক্ষিত প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত।
কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, জব্দকৃত প্রাণীগুলোর তালিকায় রয়েছে ৮টি Bearded Dragon নামক গিরগিটি, ১টি Hognose Snake, ২টি Cornsnake, ১টি Bandy-bandy Snake, ২টি Pac-Man Frog, ৩টি Albino Red Ear Slider কচ্ছপ এবং ৬টি Alligator Snapping Turtle। এদের অধিকাংশই ভিন্ন দেশ থেকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে আনার চেষ্টা করা হয়েছিল।
প্রাণীগুলো যাত্রীদের লাগেজে অত্যন্ত কৌশলে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। বিমানবন্দরের কাস্টমস হলে স্ক্যানিং এবং সন্দেহভাজন লাগেজ তল্লাশির সময় এসব প্রাণীর অস্তিত্ব ধরা পড়ে। এ সময় কাস্টমস কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে লাগেজটি জব্দ করে খুলে পরীক্ষা করেন এবং এই জীবিত প্রাণীগুলো উদ্ধার করেন।
ঢাকা কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার এক বিবৃতিতে জানান, “এই ধরনের জীবন্ত প্রাণী আমদানি করতে হলে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী পূর্বানুমতি ও বৈধ কাগজপত্র প্রয়োজন। জব্দকৃত প্রাণীগুলোর বিষয়ে ল্যাবরেটরি পরীক্ষা এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
তিনি আরও জানান, আন্তর্জাতিক চুক্তি সাইটস -এর অধীনে এসব প্রাণীর বেশ কয়েকটি প্রজাতি সুরক্ষিত। তাই এই ধরনের চোরাচালান শুধু বাংলাদেশের আইন নয়, আন্তর্জাতিক আইনেরও গুরুতর লঙ্ঘন।
বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের একটি দল ইতিমধ্যে কাস্টমস হেফাজতে থাকা প্রাণীগুলো পরিদর্শন করেছে। প্রাণীগুলোর প্রাথমিক শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গেছে, তবে দীর্ঘ ভ্রমণের কারণে কিছু প্রাণী ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।
এই ঘটনায় এখনো কোনো যাত্রী বা দালাল আটক হয়নি, তবে কাস্টমস ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত শুরু করেছে।
প্রসঙ্গত, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে ব্যবহার করে এর আগেও বিরল প্রাণীর চোরাচালানের চেষ্টা হয়েছে। বিশেষ করে বিদেশে পোষা প্রাণী হিসেবে চাহিদাসম্পন্ন এই প্রজাতিগুলোর অবৈধ বিপণনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশকে ট্রানজিট রুট হিসেবে ব্যবহার করছে আন্তর্জাতিক চক্র।
কাস্টমস হাউস, ঢাকা জানিয়েছে, তারা এ ধরনের চোরাচালান রোধে বিমানবন্দরে নজরদারি আরও জোরদার করেছে এবং প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করবে।