Home Third Lead ইরান–ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির পর ডলারের পতন, ইউরো ও রুপির উত্থান

ইরান–ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির পর ডলারের পতন, ইউরো ও রুপির উত্থান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যকার চলমান যুদ্ধবিরতির প্রভাব এবার পড়েছে বৈশ্বিক মুদ্রাবাজারে। মার্কিন ডলারের মূল্য ইউরোসহ অন্যান্য প্রধান মুদ্রার বিপরীতে ব্যাপকভাবে কমেছে। বৃহস্পতিবার  ইউরোর বিপরীতে ডলার সাড়ে তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমেছে।

বিশ্ববাজারে ডলারের দরপতনের পেছনে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের নেতৃত্ব নিয়েও তৈরি হওয়া রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা। বিনিয়োগকারীরা মার্কিন মুদ্রানীতির ওপর আস্থা হারাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।

ইউরোর বিপরীতে ডলারের মান ০.২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১.১৬৮৭ ডলারে, যা ২০২১ সালের অক্টোবরের পর সর্বোচ্চ পতন। ব্রিটিশ পাউন্ডের দাম বেড়ে ১.৩৬৯০ ডলারে পৌঁছেছে, যা ২০২২ সালের জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ। একইভাবে সুইস ফ্রাঁ ও ইয়েনের বিপরীতেও ডলারের দরপতন লক্ষ্য করা গেছে।

ডলার ইনডেক্স, যা ডলারের শক্তি পরিমাপক সূচক, তা ২০২২ সালের পর সর্বনিম্ন ৯৭.৪৯১-এ নেমে এসেছে।

এই অবস্থায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে সরিয়ে নতুন কাউকে নিয়োগের পরিকল্পনা করছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে এ ঘোষণা আসতে পারে। এতে ফেডের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবং বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি এখনই নতুন চেয়ারম্যান মনোনয়ন দেওয়া হয়, তাহলে তা ফেডের স্বাধীনতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ডলারের প্রতি আস্থা কমে যাবে।

ফেডারেল রিজার্ভের আসন্ন বৈঠকে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা বেড়ে ২৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যেখানে এক সপ্তাহ আগে ছিল মাত্র ১২ শতাংশ। বছরের শেষ নাগাদ মোট ৬৪ বেসিস পয়েন্ট সুদহার হ্রাসের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান শুল্কনীতির মেয়াদ ৯ জুলাই শেষ হতে যাচ্ছে। ২ এপ্রিল ঘোষিত এই নীতির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সব দেশকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তি করার আহ্বান জানানো হয়েছে, যা বৈশ্বিক অর্থনীতিতে নতুন উদ্বেগ তৈরি করছে।

জেপি মরগান সতর্ক করেছে, নতুন শুল্ক আরোপ যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমিয়ে মূল্যস্ফীতি বাড়াতে পারে এবং দেশটি মন্দার মুখে পড়তে পারে। সম্ভাব্য মন্দার হার ৪০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।

অন্যদিকে, ইউরোপের দেশগুলো প্রতিরক্ষা ও অবকাঠামো খাতে ঐক্যমত হওয়ায় ইউরোপীয় মুদ্রাগুলো বিশেষ করে ইউরো সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে। এর ফলে ইউরোপীয় অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ভবিষ্যৎ আশাব্যঞ্জক মনে হচ্ছে।