Home অন্যান্য বৃষ্টির দিনে দেখা

বৃষ্টির দিনে দেখা

স্মৃতি হাসান

চট্টগ্রামের বৃষ্টি আর সমুদ্রের নরম বাতাস, এই দুটোই যেন নতুন গল্পের শুরু। কখনো হঠাৎ, কখনো ধীরে ধীরে। এই শহরের নিঃসঙ্গ রাস্তা, পুরনো বইয়ের দোকান, বাতিঘরের পাশে অচেনা ছায়া, সবই অনুপম এবং রহস্যময় মেয়েটির মধ্যে এক অদ্ভুত আকর্ষণ তৈরি করে।

“বৃষ্টির দিনে দেখা” সিরিজটি প্রেম, রহস্য এবং অতীতের অমীমাংসিত স্মৃতিকে এক করে গড়ে ওঠা গল্প। এটি শুধু রোমান্টিকতা নয়; এখানে আছে হারানো স্মৃতি, একটি লকেটের রহস্য, এবং এমন এক ভীতিকর সত্য যা অনুপমকে তার অতীতের সঙ্গে মুখোমুখি হতে বাধ্য করবে।

প্রতিটি পর্বে রহস্য আরও গভীর হবে, অনুভূতি আরও তীব্র হবে, আর পাঠককে ধরে রাখবে পরবর্তী পর্বের জন্য। বৃষ্টি কেবল পানি নয়—এটি স্মৃতি, ভালোবাসা, এবং অজানা ভয়ের প্রতীক।

আপনি কি সত্যিই জানেন, এক অচেনা চোখের নজরে যে মুহূর্তে আপনার হৃদয় স্পর্শ করে—তার পরের গল্প কোথায় যাওয়া শুরু হয়?

 বৃষ্টির দিনে দেখা: প্রথম পর্ব

চট্টগ্রামের এক নরম বিকেল। আকাশে হালকা মেঘ, বাতাসে সমুদ্রের গন্ধ। ঠিক তখনই বৃষ্টি নেমে এলো টুপটাপ শব্দে। বৃষ্টি থেকে বাঁচতে অনুপম দৌড়ে ঢুকে গেল কাছের একটি বইয়ের দোকানে।

দোকানের ভেতর খুব শান্ত। তাকগুলোতে সাজানো বই থেকে হালকা কাগজের ঘ্রাণ বের হচ্ছিল। অনুপম তার জামার ভেজা অংশ চেপে পানি ঝরাচ্ছিল। ঠিক তখনই নজরে পড়লো এক মেয়েকে। সে জানালার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। সাদা-হালকা নীল সালওয়ার কামিজ, ভেজা চুলের গন্ধে চারপাশ যেন আরও নরম লাগছিল।

মেয়েটি ধীরে ঘুরে তাকাল। চোখদুটি খুব শান্ত।
অনুপম একটু হাসল।
মেয়েটিও মৃদু হাসি দিল।

“বৃষ্টি খুব হঠাৎ শুরু হলো, তাই না?” মেয়েটি বলল।

অনুপম মাথা নেড়ে বলল, “হ্যাঁ, কিন্তু এই বৃষ্টিই তো একটু সুন্দর সময় এনে দিল।”

মেয়েটি তাকিয়ে রইল কিছুক্ষণ। তারপর বলল, “আপনি কি বই পছন্দ করেন?”

“হ্যাঁ,” অনুপম উত্তর দিল, “বিশেষ করে এমন দিনে।”

দুজনেই হেসে ফেলল। এর মধ্যেই বৃষ্টি আরও জোরে পড়তে লাগল। বাইরে রাস্তার জল চকচক করছে, দোকানের ভিতরটা উষ্ণ আর শান্ত।

মেয়েটি একটি বই হাতে তুলে দিল, “এটা পড়েছেন? খুব সুন্দর একটি প্রেমের গল্প।”

অনুপম বইটি হাতে নিল, তাদের আঙুল ছুঁয়ে গেল একবার। খুব ক্ষণিকের জন্য, কিন্তু সেই স্পর্শে এক অদ্ভুত উষ্ণতা বাজল হৃদয়ের ভেতর। মেয়েটিও যেন একটু থমকে গেল।

বৃষ্টি ধীরে ধীরে থেমে এলো।
মেয়েটি কাঁধে ব্যাগ তুলে বলল, “আমি যাচ্ছি। দেখা হয়ে ভালো লাগল।”

অনুপম একটু থেমে বলল, “আবার কি দেখা হবে?”

মেয়েটি গম্ভীর মুখে কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে রইল। তারপর মৃদু হাসিতে বলল, “হয়তো… যদি বৃষ্টি আবার ডাক দেয়।”

বাইরে বেরিয়ে মেয়েটি ছাতাটা খুলল। হালকা বৃষ্টি তখনও পড়ছে। মেয়েটি রাস্তার ভেতর দিয়ে হাঁটতে লাগল, আর অনুপম জানালার পাশে দাঁড়িয়ে তাকে দেখছিল। মেয়েটি পিছন ফিরে একবার তাকালো। তাদের চোখ আবার মিলল, খুব নীরবে।

হঠাৎ মনে হলো, বৃষ্টি শুধু ভেজায় না—কখনো কখনো দুজন মানুষের মাঝে নতুন গল্পও তৈরি করে।

পরবর্তী পর্বের জন্য আগামীকাল ভিজিট করুন: businesstoday24.com