সপ্তাহজুড়ে তেলের দরপতন, উঠছে ওভারসাপ্লাই ও বাণিজ্য যুদ্ধের শঙ্কা
বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের বাজারে শুক্রবার সামান্য ঊর্ধ্বগতি দেখা গেলেও, পুরো সপ্তাহজুড়ে দরপতন থেকেই গেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার চলমান শুল্কবিষয়ক অনিশ্চয়তা এবং বিশ্ববাজারে সরবরাহ উদ্বৃত্তের আশঙ্কা—দুই মিলে বাজারে তেলের দামে নেতিবাচক চাপ সৃষ্টি করেছে।
ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচারস শুক্রবার ব্যারেলপ্রতি ৩২ সেন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৬.৮৭ ডলারে, যদিও পুরো সপ্তাহে এটি ১.৬% হারিয়েছে। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (WTI) তেলের দাম বেড়েছে ২৩ সেন্ট, যা দাঁড়িয়েছে ৬৩.০২ ডলারে। তবে এটি সপ্তাহজুড়ে ২.৬% হ্রাস পেয়েছে।
বাজার বিশ্লেষক ওলে হ্যানসেন (স্যাক্সো ব্যাংক) জানান, “ট্রেডাররা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য যুদ্ধ অব্যাহত থাকায় এবং জুন থেকে OPEC+ দেশগুলোর উৎপাদন বাড়ানোর সম্ভাবনায় স্বল্পমেয়াদে তেলের বড় মূল্যবৃদ্ধি অনিশ্চিত।”
চীন শুক্রবার কিছু মার্কিন পণ্যের ওপর আরোপিত উচ্চ শুল্কে ছাড় দিয়েছে, যা বাণিজ্য যুদ্ধ প্রশমনের ইঙ্গিত দিলেও, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দ্রুত জানিয়ে দেয়—যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যেভাবে ‘আলোচনা চলছে’ বলেছেন, তা সঠিক নয়।
এদিকে, মাসের শুরুতে তেলের দাম চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমে যায়। এর পেছনে রয়েছে অর্থনৈতিক দুর্বলতা, বিনিয়োগকারীদের আস্থা সংকট এবং আর্থিক বাজারে বিক্রয়চাপ।
উৎপাদনের দিক থেকেও উদ্বেগ বাড়ছে। সম্প্রতি কিছু OPEC+ দেশ জুন মাসে তেল উৎপাদন বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার প্রস্তাব দিয়েছে, যা বাজারে সরবরাহের চাপ আরও বাড়াতে পারে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ হলে রাশিয়ার তেল সরবরাহ বিশ্ববাজারে ফিরতে পারে, যা আরও সরবরাহ বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়।
গত সপ্তাহে তেল-নির্দেশিত রিগ এর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮৩টি, যা ভবিষ্যতে সরবরাহ বৃদ্ধির আভাস দেয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, বৈশ্বিক চাহিদার গতি কমে গেলে এবং সরবরাহ বেড়ে গেলে তেলের দাম আরও চাপে পড়তে পারে।