বিজনেস ডেস্ক:
বিশ্বের বিরল খনিজ উপাদানের সবচেয়ে বড় উৎপাদক দেশ চীন ফের রপ্তানিতে কড়াকড়ি আরোপ করেছে। শক্তিশালী চুম্বক তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় এই উপাদান এখন সরাসরি চীনা সরকারের নিয়ন্ত্রণে। ফলে ভারতসহ একাধিক দেশের শিল্পক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
চীনের এই নতুন রপ্তানি নীতির প্রভাবে প্রথম ধাক্কা খাচ্ছে ভারতের গাড়ি শিল্প। ভারতীয় নির্মাতাদের হাতে থাকা চুম্বকের মজুত দিয়ে জুনের শুরু পর্যন্তই কাজ চালানো সম্ভব হবে বলে জানা গেছে। এরপর সরবরাহ স্বাভাবিক না হলে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
শক্তিশালী এই চুম্বক ‘নিওডিয়ামিয়াম-আয়রন-বোরন’নামে পরিচিত, যা বৈদ্যুতিক গাড়ির মোটর, স্টিয়ারিং, ব্রেক, অডিও সিস্টেম, এমনকি বায়ুকল ও অন্যান্য জটিল যন্ত্রপাতিতে ব্যবহৃত হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের চুম্বকের অল্প ঘাটতিও অ্যাসেম্বলি লাইনে বড় ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
বিশ্বের প্রায় ৯০ শতাংশ বিরল চুম্বক চীনে উৎপাদিত হয়। সম্প্রতি চীন সরকার রপ্তানির ক্ষেত্রে সরকারি লাইসেন্স ও ব্যবহার সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য বাধ্যতামূলক করেছে। ফলে অনুমোদনের প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হচ্ছে এবং ভারতে পাঠানো অনেক চালান চীনা বন্দরে আটকে আছে।
অন্যদিকে, ইউরোপের বেশ কিছু কোম্পানি ইতিমধ্যেই তাদের অর্ডার পেয়ে গেছে। কিন্তু ভারতের চালান আটকে থাকার বিষয়টি ভারতের জন্য কৌশলগত দিক থেকেও চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে। অর্থবর্ষ ২০২৩-২৪ সালে ভারত চীন থেকে ৪৬০ টন বিরল চুম্বক আমদানি করেছিল। এখন ভারতের কাছে এই চুম্বকের কোনও বিকল্প উৎস নেই।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় অটোমোবাইল প্রস্তুতকারী সংগঠন সিয়াম (SIAM) এবং যন্ত্রাংশ নির্মাতা সংগঠন অ্যাকমা (ACMA)-র একটি প্রতিনিধি দল চীনের সঙ্গে আলোচনায় বসার উদ্যোগ নিয়েছে। পাশাপাশি কূটনৈতিক পর্যায়েও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে ভারত সরকার।
শিল্পমহলের আশঙ্কা, যদি শিগগিরই সমাধান না হয়, তবে গাড়ি উৎপাদন থমকে যেতে পারে, যার প্রভাব পড়বে কর্মসংস্থান ও রফতানির উপরেও।