বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক:
ভিয়েনা কনভেনশন (১৯৬১) হলো আন্তর্জাতিক আইনের একটি অন্যতম প্রধান স্তম্ভ। এটি মূলত স্বাধীন রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের নিয়মাবলী নির্ধারণ করে। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশ এই চুক্তির অধীনে পরিচালিত হয়, যা আন্তর্জাতিক শান্তিশৃঙ্খলা ও সম্পর্ক বজায় রাখতে সহায়তা করে।
এই কনভেনশনের সবচেয়ে শক্তিশালী দিক হলো কূটনীতিকদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা। একজন কূটনীতিক যে দেশে কর্মরত থাকেন, সেই দেশ তাকে কোনো অবস্থাতেই গ্রেফতার বা আটক করতে পারে না। তিনি যেকোনো প্রকার শারীরিক লাঞ্ছনা বা আক্রমণ থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত থাকেন এবং রাষ্ট্র তাকে সর্বোচ্চ স্তরের নিরাপত্তা প্রদান করতে বাধ্য থাকে।
স্বাগতিক দেশের সরকার বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কূটনীতিকের কার্যালয় (দূতাবাস) বা তার বাসভবনে বিনানুমতিতে প্রবেশ করতে পারে না। এমনকি জরুরি পরিস্থিতিতেও রাষ্ট্রদূতের অনুমতি ছাড়া সেখানে পুলিশ প্রবেশ করা নিষিদ্ধ। দূতাবাসের সমস্ত নথিপত্র এবং তথ্যভাণ্ডার চিরকাল অলঙ্ঘনীয় বলে গণ্য হয়।
কূটনীতিকরা সেই দেশের স্থানীয় আদালত বা আইনের আওতামুক্ত থাকেন। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি মামলা করা যায় না এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেওয়ানি মামলার ক্ষেত্রেও তারা দায়মুক্তি পান। যদি কোনো কূটনীতিক কোনো অপরাধে জড়িয়ে পড়েন, তবে স্বাগতিক দেশ তাকে কেবল ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে পারে, কিন্তু বিচার করতে পারে না।
কূটনীতিকদের স্থানীয় সরকারকে কোনো প্রকার ব্যক্তিগত আয়কর বা পৌরকর দিতে হয় না। এছাড়া কূটনৈতিক ব্যবহারের জন্য বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে তারা শুল্কমুক্ত (Tax-free) সুবিধা ভোগ করেন।
কূটনীতিকরা তাদের নিজ দেশের সরকারের সাথে অবাধে যোগাযোগের অধিকার রাখেন। তাদের পাঠানো ‘কূটনৈতিক ব্যাগ’ বা চিঠিপত্র পরীক্ষা করা বা আটকে রাখা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। এর মাধ্যমে অত্যন্ত সংবেদনশীল তথ্য অত্যন্ত নিরাপদে আদান-প্রদান করা সম্ভব হয়।










