বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: শীতের সকালে হঠাৎ ভূকম্পনে কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা এবং এর পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা ১৪ মিনিটে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। উৎপত্তিস্থল ঢাকার অদূরে নরসিংদী হওয়ায় কম্পনের তীব্রতা রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় বেশ ভালোভাবেই অনুভূত হয়েছে।
উৎপত্তিস্থল ও গভীরতা
ইউরোপিয়ান মেডিটেরিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টার (ইএমএসসি)-এর তথ্য অনুযায়ী, এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল (এপিসেন্টার) ছিল নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলায়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে সুনির্দিষ্ট তথ্য জানা না গেলেও, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থলের গভীরতা ছিল ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ৩০ কিলোমিটার গভীরে।
গভীরতা ৩০ কিলোমিটার হওয়ায় এটি ‘মাঝারি গভীরতার’ ভূমিকম্প হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সাধারণত উৎপত্তিস্থল খুব বেশি গভীরে না হলে কম্পন ভূপৃষ্ঠে বেশি অনুভূত হয়।
জনমনে আতঙ্ক
ভোরবেলা যখন অধিকাংশ মানুষ ঘুমে অথবা দিন শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, ঠিক তখনই এই কম্পন অনুভূত হয়। আকস্মিক ঝাঁকুনিতে অনেকের ঘুম ভেঙে যায়। নরসিংদী, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ এবং ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় আতঙ্কে মানুষ ভবন থেকে খোলা জায়গায় বেরিয়ে আসেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও মুহূর্তের মধ্যে ভূমিকম্পের বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই জানান, কম্পনটি কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী ছিল এবং এর তীব্রতা বেশ ভালোই টের পাওয়া গেছে।
শিবপুরের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিকট এক আওয়াজের সাথে তারা তীব্র ঝাঁকুনি অনুভব করেন। তবে এখন পর্যন্ত নরসিংদী বা ঢাকার কোথাও বড় কোনো ক্ষয়ক্ষতির বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
বিশেষজ্ঞদের মত
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশ ভৌগোলিকভাবে ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় অবস্থিত। বিশেষ করে ‘মধুপুর ফল্ট’ বা চ্যুতিরেখার কাছাকাছি হওয়ায় ঢাকা ও নরসিংদী অঞ্চলটি ভূতাত্ত্বিকভাবে সংবেদনশীল। শিবপুরে উৎপত্তিস্থল হওয়া সেই ঝুঁকিরই ইঙ্গিত বহন করে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদরদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, তারা পরিস্থিতির খোঁজখবর রাখছেন এবং সব স্টেশনে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।
সতর্কতা
ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কিত না হয়ে সাবধানে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে বহুতল ভবনে অবস্থানকারীদের সিঁড়ি ব্যবহার করে নিচে নামার সময় হুড়োহুড়ি না করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিস্তারিত ক্ষয়ক্ষতির তথ্য এবং রিখটার স্কেলে এর সঠিক মাত্রা সম্পর্কে আবহাওয়া অধিদপ্তর বা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো থেকে আরও তথ্যের অপেক্ষা করা হচ্ছে।









