বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার:টানা বর্ষণ ও উজান থেকে আসা ঢলে মৌলভীবাজারে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মনু নদীর পানি বিপদসীমার ৭৩ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে, যা স্থানীয়দের জন্য মারাত্মক উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরই মধ্যে নদীর বাঁধ উপচে জেলার রাজনগর ও সদর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত অন্তত ৮ হাজার ৪৭৩ জন মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। নদীপাড়ের বাসিন্দারা নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে রাত জেগে বাঁধ পাহারা দিচ্ছেন। রাজনগরের আদিনাবাদ, একামধু ও কান্দিরকুল এলাকার বাঁধে ফাটল ও ধস দেখা দেওয়ায় আতঙ্ক আরও বেড়েছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, বাঁধ ভেঙে গেলে বিস্তীর্ণ এলাকা ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়বে।
এরই মধ্যে মৌলভীবাজার-শমশেরনগর সড়কের শিমুলতলা অংশ তলিয়ে গেছে। পাশাপাশি কুশিয়ারা, ধলাই ও জুড়ী নদীর পানিও বেড়েই চলেছে। জুড়ী নদীর পানি ইতোমধ্যে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে, ফলে জেলার আরও বেশ কিছু নিম্নাঞ্চল নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন ১২৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে, যদিও এখন পর্যন্ত আশ্রয় নিয়েছেন শতাধিক মানুষ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় প্রতি উপজেলায় তিন লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, পাশাপাশি বরাদ্দ এসেছে ১৩০ মেট্রিকটন চাল। জেলা প্রশাসন আরও ৫০ লাখ টাকা জরুরি অনুদান চেয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন করেছে।
বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে গঠিত হয়েছে ৩৭ সদস্যের একটি বিশেষ মনিটরিং কমিটি। সেনাবাহিনী, বিজিবি ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেন জানিয়েছেন, “আমরা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছি। ত্রাণ বিতরণ ও আশ্রয়কেন্দ্র ব্যবস্থাপনায় প্রশাসনের সব ইউনিট কাজ করছে।”