Home শিক্ষা মাইলস্টোন শিক্ষিকা মাসুকা বেগম শায়িত হলেন সোহাগপুরে

মাইলস্টোন শিক্ষিকা মাসুকা বেগম শায়িত হলেন সোহাগপুরে

মাইলস্টোন শিক্ষিকা মাসুকা
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: শেষ ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটল শিক্ষক মাসুকা বেগমের দাফনে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে বড় বোনের বাড়ির কবরস্থানে তাঁকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকেলে সোহাগপুর ঈদগাহ মাঠে জানাজার পর গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজি বিভাগের এই শিক্ষিকাকে। এর আগে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে তাঁর মরদেহ গ্রহণ করেন বড় বোন পাঁপড়ি রহমান ও ভগ্নিপতি মো. খলিলুর রহমান।

গত সোমবার রাজধানীর আশকোনায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। ঘটনার সময় মাসুকা বেগম ক্লাস নিচ্ছিলেন। হঠাৎ বিস্ফোরণের পর আগুন ছড়িয়ে পড়লে তাঁর শরীরের প্রায় ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়। তাঁকে দ্রুত বার্ন ইনস্টিটিউটে নেওয়া হলেও রাত সাড়ে ১২টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।

চিরবিদায়ের আগে হাসপাতালের পাশের বেডে থাকা এক সহকর্মীকে মাসুকা জানিয়েছিলেন—মৃত্যুর পর যেন তাঁকে আশুগঞ্জের সোহাগপুর গ্রামে দাফন করা হয়। এই ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে পরিবার তাঁর মরদেহ সেখানে নিয়ে যায়।

মাসুকা বেগম ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের চিলোকুট গ্রামের প্রয়াত সিদ্দিক আহমেদ চৌধুরীর কনিষ্ঠ কন্যা। ছোটবেলাতেই মাকে হারিয়ে তিনি বড় হয়েছেন বড় বোনের স্নেহে। সেই বড় বোনের বাড়িই হয়ে উঠেছিল তাঁর আপন ঠিকানা।

তাঁর মৃত্যুতে চিলোকুট ও সোহাগপুরে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। স্থানীয়রা, আত্মীয়স্বজন ও সহকর্মীরা এই অকাল মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না।

মাইলস্টোন কলেজের সহকর্মী অধ্যাপক আবু হানিফ বলেন, “মাসুকা ছিলেন মেধাবী, ধর্মভীরু ও পর্দানশীল একজন শিক্ষক। প্রতিটি কাজেই ছিলেন নিষ্ঠাবান। তাঁর এই মর্মান্তিক মৃত্যু আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।”

তিনি আরও বলেন, “বিমান দুর্ঘটনার মতো ভয়াবহ ঘটনা যেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আর না ঘটে, সে জন্য দ্রুত তদন্ত ও প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ জরুরি।”