Home বিনোদন ‘ভালোবাসা মানে শুধু রোম্যান্স নয়’: মাদিহা ইমাম তরুণীদের দিলেন পরামর্শ

‘ভালোবাসা মানে শুধু রোম্যান্স নয়’: মাদিহা ইমাম তরুণীদের দিলেন পরামর্শ

মাদিহা ইমাম। ছবি সংগৃহীত

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: পাকিস্তানি তারকা ফয়সাল কুরেশি এবং মাদিহা ইমাম সম্প্রতি ফিউশিয়া ম্যাগাজিনের রবিয়া মুগনি-র সঙ্গে এক খোলামেলা আলোচনায় জানালেন, কিভাবে পাকিস্তানি বিনোদন জগৎ সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয়েছে এবং এখন এমন চরিত্র ও গল্প বলার সাহস করছে, যা একসময় অকল্পনীয় ছিল। এই সাক্ষাৎকারে তাঁরা মূলত নিজেদের সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ড্রামা বেহরুপিয়া-র প্রসঙ্গে কথা বলছিলেন, যা সম্প্রতি গ্রিন টিভি এন্টারটেইনমেন্টে প্রিমিয়ার হয়েছে।

শাকিল খান পরিচালিত এবং তাহরিম চৌধুরী প্রযোজিত বেহরুপিয়া একটি চরিত্রের গল্প বলে, যে ভুগছে ডিসোসিয়েটিভ আইডেন্টিটি ডিজঅর্ডারে (DID) এবং যার নয়টি আলাদা ব্যক্তিত্ব রয়েছে। চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলেছেন ফয়সাল কুরেশি। যদিও পাকিস্তানি ড্রামায় এর আগে জখম-এর মতো প্রকল্পে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ হয়েছে, তবে কুরেশির মতে, বেহরুপিয়া-র মতো সিরিজ এখনও এক নতুন অধ্যায়।

কথোপকথনের সময় ফয়সাল ও মাদিহা উঠে আসা নানা চ্যালেঞ্জের কথাও জানান। তাঁরা বলেন, বিনোদন জগতে এখনও অবিবাহিত মহিলারা পুরুষ সহকর্মীদের সাথে কাজ করলেই ‘চরিত্র হননের’ শিকার হন। মাদিহা, যিনি ২০২৩ সালে নির্মাতা মোজি বাসারের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন, জানান, আত্মবিশ্বাসী থাকলেও বিয়ের পর তাঁর জীবনে যেন একটি নিরাপত্তার আশ্রয় এসেছে। মাদিহা বলেন, “আমি যদি ভুলও করি, এখন একজন আছে যে আমাকে সামলে নেবে।”

বেহরুপিয়া-র প্রসঙ্গে আলোচনায় উঠে আসে, কিভাবে বাস্তবে DID-এর মতো সমস্যা গোপন থাকে সমাজের স্টিগমার কারণে। ফয়সাল কুরেশি জানান, একই ধরনের অব্যক্ত সমস্যা স্তন ক্যান্সার সম্পর্কেও আছে—অনেক নারী সামাজিক ভয়ে রোগ লুকিয়ে রাখেন। অভিনেতারা এবং সঞ্চালক তিনজনেই একমত হন, যে মানসিক রোগ শুধু আক্রান্ত ব্যক্তিকেই নয়, তাদের কাছের মানুষদের জীবনেও গভীর প্রভাব ফেলে।

আলোচনায় উঠে আসে ভালোবাসার ভুল ধারণা নিয়েও। তাঁরা বলেন, কিভাবে সাহিত্য, সিনেমা ও সংস্কৃতি ‘লাভ বম্বিং’ বা প্রেমের অতিরঞ্জিত রূপকেই রোমান্টিক করে তুলেছে, যা বাস্তবে অনেক সময় ক্ষতিকর হয়। মাদিহা ইমাম পরামর্শ দেন, নতুন প্রজন্মের মেয়েদের সম্পর্কের ব্যাপারে আরও বাস্তববাদী হওয়া উচিত।

এছাড়া, সঞ্চালিকা মুগনি যখন সঠিক পারিবারিক সহায়তার গুরুত্বের প্রসঙ্গ তোলেন, ফয়সাল কুরেশি জোর দেন, রিশতার জন্য মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার আগে বাবা-মায়েদের আরও সচেতন এবং বিচক্ষণ হওয়া উচিত।

বেহরুপিয়া কেবল এক ব্যতিক্রমী চরিত্রের গল্প নয়, এটি সমাজের গভীর সমস্যাগুলির আয়না তুলে ধরে—সাহসী এক প্রয়াস, যা হয়তো পাকিস্তানি টিভি জগতের নতুন পথচলা সূচিত করবে।