বিনোদন ডেস্ক: দক্ষিণ কোরিয়ার জনপ্রিয় গায়ক ও কে-পপ ব্যান্ড এনসিটি-র প্রাক্তন সদস্য মুন-তাই-ইল ওরফে তাইলকে ধর্ষণের অভিযোগে সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে সিউল সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট। একই মামলায় দণ্ডিত হয়েছেন তাঁর সহযোগী লি ও হং, যাঁদের প্রত্যেককে তিন বছর ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
তাই ও তাঁর দুই সঙ্গীর বিরুদ্ধে অভিযোগ: তাঁরা ২০২৪ সালের জুনে সিউলের ইতাওন জেলার এক পানশালায় এক চীনা নারী পর্যটকের সঙ্গে দেখা করেন। অতিরিক্ত মদ্যপানে পর্যটক যখন প্রায় অচেতন, তখন তাঁকে ট্যাক্সিতে করে একজনের বাসায় নিয়ে গিয়ে তাঁরা সংঘবদ্ধভাবে যৌন নির্যাতন করেন। ভুক্তভোগী তখন পুরোপুরি অচেতন থাকায় সম্মতির প্রশ্নই ছিল না। আদালতের মতে, ভুক্তভোগীর শারীরিক ও মানসিক অবস্থার সুযোগ নেওয়াই ছিল অপরাধের মূল বিষয়।
২০২৫ সালের জুনে অভিযুক্ত তিনজনই আদালতে অপরাধ স্বীকার করেন। বিচারের সময় প্রসিকিউশন পক্ষ আদালতে যুক্তি দেন—তারা ইচ্ছাকৃতভাবে ভুক্তভোগীকে সজ্ঞান অবস্থায় না রেখে অপরাধ আড়াল করার চেষ্টা করেছে। প্রসিকিউটররা তাইলের জন্য সাত বছরের কারাদণ্ড দাবি করলেও, আদালত কিছুটা কম শাস্তি প্রদান করে। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছে, তিন আসামিকে যৌন সহিংসতা প্রতিরোধমূলক ৪০ ঘণ্টার চিকিৎসা কর্মসূচিতে অংশ নিতে হবে।
এ মামলার রায় ঘোষণার পরপরই তিনজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়।
কে-পপ তারকাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের যৌন সহিংসতার অভিযোগ আগেও উঠে এসেছে। ২০১৯ সালে চোই জং-হুন এবং জং জুন-ইয়ং যৌন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে যথাক্রমে পাঁচ এবং ছয় বছরের সাজা পান। ২০২১ সালে বিগব্যাং ব্যান্ডের প্রাক্তন সদস্য সেউংরি বার্নিং সান নাইটক্লাব কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে তিন বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন।
বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ কোরিয়ার বিনোদন শিল্পের উজ্জ্বল মুখোশের আড়ালে এক ভয়াবহ পুরুষতান্ত্রিক ও ক্ষমতাবান সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, যা নারীদের নিরাপত্তা ও মর্যাদার জন্য হুমকি। এ ঘটনাগুলি শুধু বিচারালয় নয়, গোটা সমাজকে নিজেদের কাঠামো নতুন করে মূল্যায়নের আহ্বান জানাচ্ছে।