Home সারাদেশ মুহুরী নদীর ভয়াল ঢল, নিম্নাঞ্চলে হু হু করে ঢুকছে পানি

মুহুরী নদীর ভয়াল ঢল, নিম্নাঞ্চলে হু হু করে ঢুকছে পানি

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ফেনী:  ভারতের ত্রিপুরায় লাগাতার ভারী বৃষ্টিপাতের প্রভাবে ফের উজান থেকে নেমে আসা ঢলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ফেনীর সীমান্তবর্তী অঞ্চল। সোমবার সকাল থেকেই মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি হু-হু করে বাড়তে থাকে। এতে পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলার বহু নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে।

নদীগুলোর তীব্র স্রোতে ইতিমধ্যে ভেঙে পড়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের একাধিক দুর্বল অংশ। স্থানীয়রা জানায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পূর্বে মেরামত করা বাঁধের স্থায়িত্ব এক বছরও হয়নি। ফের সেসব স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

পরশুরামের পশ্চিম অলকার বাসিন্দা মাসুম বলেন, “এখানে খুব একটা বৃষ্টিও হচ্ছে না, অথচ হঠাৎ পানি এসে ঘর ডুবিয়ে দিচ্ছে। বছর ঘুরতেই আবার বাঁধ ভেঙে গেল। আমরা যেন দুঃখ নিয়েই বাঁচি।”

পাউবো সূত্র জানায়, চলতি জুলাই মাসের শুরু থেকেই উজানের বৃষ্টিতে নদীগুলোর পানি বাড়তে থাকে। ৮ জুলাই থেকে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বাঁধে অন্তত ৪১টি ভাঙন দেখা দেয়। তার মধ্যে মাত্র ৬টি স্থানে মেরামত সম্পন্ন হলেও ২৮টি স্থানে এখনো কাজ চলছে। এমন পরিস্থিতিতে আবার ঢল নামায় আরও ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হয়েছে।

ফুলগাজীর উত্তর শ্রীপুর, দরবারপুর, আমজাদহাট, ধর্মপুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম এরই মধ্যে পানিতে তলিয়ে গেছে। বাঁধ ভেঙে গ্রামের পর গ্রাম ঢলের পানিতে ডুবে যাচ্ছে।

পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম জানান, সোমবার বেলা ১টার দিকে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১২ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি দ্রুত বাড়ছে, তাই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মজিবুর রহমান জানান, স্থানীয়ভাবে বৃষ্টিপাত খুব বেশি নয়। ফেনীতে গত ২৪ ঘণ্টায় মাত্র ৯ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। তবে ভারতের ত্রিপুরায় টানা ভারী বৃষ্টির কারণে ফেনীর নদ-নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে যাচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, গত বছরের ভয়াবহ বন্যার পর ২০ কোটি টাকার প্রকল্পে বাঁধ মেরামতের কাজ হয়েছিল। কিন্তু সেই কাজ টেকসই ছিল না বলেই এবার অল্প ঢলেই তা ভেঙে পড়েছে।

পরিস্থিতি মোকাবেলায় এখনই কার্যকর ও টেকসই উদ্যোগ না নিলে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ফেনীবাসীর দুর্ভোগ চরমে উঠবে— এমনটাই আশঙ্কা করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সচেতন নাগরিকেরা।