বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে মামলার বাকি ছয় আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও বহাল রাখা হয়েছে।
সোমবার বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেন সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার একই বেঞ্চ রায় ঘোষণার জন্য দিন নির্ধারণ করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হুমায়ুন কবির মঞ্জু ও শামীমা দিপ্তি। আসামিপক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এসএম শাহাজাহান।
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, মেজর সিনহা হত্যা মামলাটি দেশের একটি আলোচিত ঘটনা। এ ঘটনায় প্রদীপ ও লিয়াকতের ফাঁসিসহ বিচারিক আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায় বহাল রাখার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন তিনি।
প্রধান বিচারপতির নির্দেশনায় মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য গত ২১ এপ্রিল এই হাইকোর্ট বেঞ্চ নির্ধারিত হয়। পরে ২৩ এপ্রিল আপিল শুনানি শুরু হয়।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর সিনহা। তিনি সেনাবাহিনী থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে ভ্রমণবিষয়ক তথ্যচিত্র নির্মাণে কাজ করছিলেন। কক্সবাজারে তথ্যচিত্রের কাজ করতে গিয়েই পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান তিনি।
ঘটনার প্রায় দেড় বছর পর ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এই মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড এবং তিন পুলিশ সদস্য ও পুলিশের তিন সোর্সকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এ মামলায় পুলিশের আরও চার সদস্য ও এপিবিএনের তিন সদস্যকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার পর মৃত্যুদণ্ডের অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে এবং দণ্ডপ্রাপ্তরা আপিল করেন।
মেজর সিনহা হত্যায় পুলিশের ভূমিকা, অস্ত্রের অপব্যবহার ও ঘটনার ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা নিয়ে দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছিল। এই মামলার রায়কে অনেকেই আইন ও মানবাধিকারের পক্ষে একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির হিসেবে দেখছেন।
♦এই ধরনের আরও খবর পড়তে আমাদের সাথেই থাকুন। নিয়মিত আপডেট পেতে ভিজিট করুন বিজনেসটুডে২৪.কম।
সংবাদটি আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে শেয়ার করুন এবং মতামত জানাতে কমেন্ট করুন।
