Home সারাদেশ শ্যামলী বাসের নিচে আধা কিলোমিটার, নিঃশেষ দুই মোটরসাইকেল আরোহী

শ্যামলী বাসের নিচে আধা কিলোমিটার, নিঃশেষ দুই মোটরসাইকেল আরোহী

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, সৈয়দপুর (নীলফামারী): নীলফামারীর সৈয়দপুরে নির্মম এক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ইটভাটার দুই পরিশ্রমী মানুষ, নৈশপ্রহরী নূর ইসলাম (৪৮) এবং ফায়ারম্যান মাসুদ হোসেন (২৫)। বুধবার সকালে সৈয়দপুর-রংপুর মহাসড়কের কলাবাগান এলাকায় শ্যামলী পরিবহনের একটি দ্রুতগামী কোচ পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে তাদের বহনকারী মোটরসাইকেলটিকে প্রায় আধা কিলোমিটার পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দুই আরোহীর।

সাধারণ একটি সকাল। কাজ শেষ করে ঘরে ফেরার আনন্দ নিয়ে মোটরসাইকেলে উঠেছিলেন নূর ও মাসুদ। হয়তো পথের ধারে দাঁড়িয়ে থাকা সন্তান কিংবা অপেক্ষায় থাকা স্ত্রী, বৃদ্ধ মা, ছোট ভাই, তাদের কাছে ফেরার আশাই ছিল মনে। কিন্তু ফিরলেন না। ফিরলেন রক্তাক্ত নিথর দেহ হয়ে, আর ফিরে গেলেন না কখনও।

নিহত নূর ইসলাম একজন নৈশপ্রহরী হিসেবে কাজ করতেন স্থানীয় একটি ইটভাটায়। দিনের আলো ফোটার আগেই দায়িত্ব শেষ করে ফিরছিলেন বাড়িতে। তার সঙ্গী মাসুদ ছিলেন একই ইটভাটার ফায়ারম্যান। দুজনেই ছিলেন দরিদ্র পরিবারের ভরসা। কাজ শেষে ফিরছিলেন একই পথে, এক সওয়ারে।

স্থানীয়রা জানান, ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনার পর পুরো এলাকা থমকে যায়। মানুষের চোখে জল, মুখে স্তব্ধতা। পথের ধারে পড়ে থাকে দুমড়ানো-মুচড়ানো মোটরসাইকেলটি, আর তার পাশে রক্তে ভেজা দুই মানবদেহ।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, “ঘাতক বাসটি আটক করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।”

একটি অসাবধান মুহূর্ত, একটি বেপরোয়া বাস, আর নিভে গেল দুটি জীবন। অভাব-অনটনের মধ্যেও যারা ঘাম ঝরিয়ে সংসার টিকিয়ে রেখেছিলেন, তারা আজ নেই। তাদের শূন্যতায় আজ দুইটি পরিবার চিরকাল ব্যথিত থাকবে। এই মৃত্যু শুধুই সংখ্যায় নয়—এই মৃত্যু এক জীবনের গল্প থেমে যাওয়া, এক সমাজের কান্না।