- রবিবার দুপুর পর্যন্ত ৬০ শতাংশ ছিল মোটর সাইকেল
- মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় দু’জনের প্রাণহানি
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: পদ্মা সেতুতে সোমবার ভোর ৬টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এ বিষয়ে রোববার (২৬ জুন) রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সেতু বিভাগ। রবিবার সন্ধ্যায় মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় দু’জন প্রাণ হারায় সেতুতে, যা প্রথম দুর্ঘটনা।
রবিবার ভোর থেকেই সব ধরনের যানবাহনের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে পদ্মা সেতু। এরপর থেকে অনেকেই বাইক ও প্রাইভেটকার নিয়ে সেতু পার হচ্ছেন। সেই সঙ্গে ট্রাক, বাসসহ বিভিন্ন ধরনের যান চলাচল করছে সেতু দিয়ে। তবে মোটরসাইকেলের উপস্থিতি দেখা গেছে সবচেয়ে বেশি।
সেতু ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রথমদিন দুপুর পর্যন্ত যেসব গাড়ি সেতু পার হয়েছে, তার মধ্যে ৬০ শতাংশ ছিল মোটরসাইকেল।
পদ্মা সেতু্ যানবাহনের জন্য খুলে দেয়ার প্রথম দিনে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই বন্ধুর মৃত্যু হয়েছে। এটা পদ্মাসেতুতে প্রথম দুর্ঘটনা এবং মৃত্যু।
পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় সেতুর ২৭ এবং ২৮ নম্বর পিয়ারের মাঝামাঝি এলাকায় মোটরসাইকেলে চড়ে যাওয়ার সময় তারা দূর্ঘটনায় পড়েন। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মোবাইলে ভিডিও করার সময় দুর্ঘটনায় পড়েন ওই দুই তরুণ।পরে আহত অবস্থায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন বলে মেডিকেল ফাঁড়ি পুলিশের পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান। তিনি বলেন, “দুইজনকেই মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল।”
নিহত দুজনের মধ্যে একজন ২৫ বছর বয়সী ফজলু কিছুদিন আগে দেশের বাইরে থেকে এসেছেন। আর একই বয়সের আলমগীর পেশায় মোটর মেকানিক।তাদের বাড়ি ঢাকা জেলার দোহার-নবাবগঞ্জ এলাকায়।
পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি জিহাদুল কবির জানান, “মোটরসাইকেল আরোহীদের একজন চলন্ত অবস্থায় ভিডিও করছিলেন। ঘটনাস্থলে পাওয়া একটি মোবাইলে থাকা ভিডিওতে একটি ট্রাক ওভারটেক করার দৃশ্য দেখা গেছে। এরপরই ভিডিওটি বন্ধ হয়ে যায়। মনে হচ্ছে তারা ট্রাকের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে গিয়েছিলেন।”
৬ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুতে বাইসাইকেল, অটোরিকশা চলাচল নিষিদ্ধ থাকলেও মোটর সাইকেল চলাচলে বাধা ছিল না। বাইকের জন্য ১০০ টাকা টোলও নির্ধারিত হয়েছিল।
পদ্মাসেতু রবিবার সকাল ৬টায় খুলে দেওয়ার পর সেতুতে অসংখ্য মোটর সাইকেলের ভিড় হয় । সন্ধ্যার পরও শত শত মোটর সাইকেলকে সেতুর দুই প্রান্তের টোল প্লাজায় ভিড় করে থাকতে দেখা যায় পার হওয়ার অপেক্ষায়।
মোটর বাইকের আরোহীরা সেতুর উপর উঠে দল বেঁধে, আনন্দ-উল্লাস আর হৈ-হুল্লোড়ে মেতে ছিল দিনভর। এর মধ্যে সন্ধ্যার পর বাইক দুর্ঘটনার খবর আসে সোশাল মিডিয়ায়।
ফেইসবুক ও ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে দেখা যায়, সেতুর মাঝখানে বিভাজকের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে দুই তরুণ, পাশেই মোটর সাইকেল।
ফজলু ও আলমগীরের বন্ধু জয়দেব রায় ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিকদের জানান, তারা ছয় বন্ধু তিনটি মটরসাইকেল নিয়ে পদ্মা সেতু দেখতে গিয়েছিলেন। সেতু পার হয়ে ওপারে যাওয়ার পর জাজিরা থেকে আবার মাওয়ায় ফেরার সময় ওই দুর্ঘটনা হয়।
“ফেরার পথে আমাদের দুটো মোটর সাইকেল আগে চলে এলেও আরেকটা পিছিয়ে পড়ে। ওদের দেরি দেখে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করি। কিন্তু না আসায় পেছনে ফিরে গিয়ে দেখি ওরা দুর্ঘটনায় পড়েছে। পরে ওদের ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসি।”
এ ঘটনায় মাদারীপুরের শিবচর থানায় একটি মামলা করা হবে বলে জানান ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি জিহাদুল কবির।










