মো.মাসুদ রানা , রামগড়: খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাররামগড় উপজেলায় গত দুই মাস ধরে মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সেবা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত । এর ফলে এলাকায় হাজার হাজার মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। সরকারি-বেসরকারি অফিসের কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে, প্রবাসীরা তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। এছাড়াও শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা অনলাইনে পরিচালিত কাজে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না।
স্থানীয়রা জানান, আগে রবি মোবাইল তাদের সেবার মান ও নেটওয়ার্ক কার্যক্রমে এগিয়ে থাকলেও গত ২ মাস ধরে তা প্রায় স্থগিত। অন্যদিকে গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্কও খুব সীমিত মাত্রায় কাজ করছে। বিদ্যুৎ চলে গেলে তাদের টাওয়ারগুলো বন্ধ হয়ে যায়। অধিকাংশ টাওয়ারেই নেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা, জেনারেটর কিংবা সোলার সুবিধা। অতীতে রবি মোবাইলের টাওয়ারগুলোতে নিয়মিত মেকানিক পাঠানো হতো এবং জেনারেটরে জ্বালানি সরবরাহ হতো, কিন্তু এখন গত দুই মাস ধরে এসব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এর ফলে টাওয়ারগুলো অকেজো হয়ে পড়েছে এবং সেবা সম্পূর্ণ বন্ধের উপক্রম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টাওয়ার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি জানান, এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক সমস্যার পেছনে রয়েছে চাঁদাবাজি ও সশস্ত্র আঞ্চলিক দলের দৌরাত্ম্য। গত এক মাসে একাধিকবার মোবাইল টাওয়ারে হামলা, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা, অগ্নিসংযোগ এবং কয়েকজন অপারেটরের অপহরণ হয়েছে। এছাড়াও রবি মোবাইলের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিল সংক্রান্ত জটিলতা এবং নিরাপত্তাজনিত কারণে টাওয়ারগুলোর কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জনজীবনে ব্যাপক অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি অফিসের কাজ থমকে গেছে, শিক্ষার্থীরা অনলাইন শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং ব্যবসায়ী ও প্রবাসীদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারছেন না।
রামগড় উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী শামীম বলেন, “নেটওয়ার্ক সমস্যার বিষয়ে আমরা এলাকার মানুষের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। আশা করছি দ্রুত সেবা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে।”
তবে এ বিষয়ে মোবাইল অপারেটর কোম্পানির কোনো পক্ষ থেকে এখনও সরাসরি কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
নেটওয়ার্ক সেবার অবস্থা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত রামগড়ের সাধারণ মানুষ দিনদিন আরও বেশি দুর্ভোগে পড়ছেন। তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।