বিজেনসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: অনলাইন জুয়াবিরোধী পদক্ষেপে আরও কঠোর হলো বাংলাদেশ ব্যাংক। দেশের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা পরিচালনাকারী সব প্রতিষ্ঠানের মার্চেন্ট, এজেন্ট বা গ্রাহক কেউ যদি অনলাইন জুয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাদের বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানাতে বলা হয়েছে।
বুধবার (২৮ মে) বাংলাদেশ ব্যাংক এক জরুরি সার্কুলারে এসব নির্দেশনা দেয়। মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী সব প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো ওই সার্কুলারে কড়া ভাষায় সতর্ক করা হয়।
সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়, ‘অনলাইন জুয়া বর্তমানে শুধু অর্থনৈতিক নয়, সামাজিক অবক্ষয়ের অন্যতম উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাদক, সন্ত্রাস ও মানবপাচারের মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে এর যোগসূত্র স্পষ্ট।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভাষ্যমতে, অনলাইন জুয়ার অধিকাংশ লেনদেনই হয় মোবাইল ব্যাংকিং প্ল্যাটফর্মে। এ কারণে এসব আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়:
মার্চেন্ট বা এজেন্টরা নির্ধারিত এলাকা ব্যতীত অন্যত্র ব্যবসা করছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে।
কোনো মার্চেন্ট বা গ্রাহক অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত কিনা তা বিশেষভাবে তদারকি করতে হবে।
প্রয়োজনে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সসহ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে লেনদেন মনিটরিং করতে হবে।
অনলাইন জুয়ার ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে গ্রাহকদের সচেতন করতে হবে নিয়মিত প্রচারণার মাধ্যমে।
সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫:
এ নির্দেশনার প্রেক্ষাপটে সরকারের সদ্য জারি করা সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর কথাও উল্লেখ করা হয়। নতুন আইন অনুযায়ী, অনলাইন জুয়া এখন থেকে শাস্তিযোগ্য সাইবার অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। যার ফলে কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা সেবা প্রদানকারী প্রতক্ষ্য বা পরোক্ষভাবে এর সঙ্গে যুক্ত থাকলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই পদক্ষেপকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অনেকে। তারা মনে করেন, প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে এ ধরনের উদ্যোগ অনিবার্য হয়ে উঠেছে।
অনলাইন জুয়ার বিস্তার এখন দেশের তরুণ সমাজ থেকে শুরু করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝেও গভীর প্রভাব ফেলছে। দিনে দিনে এই জুয়া শুধু বিনোদনের ছদ্মবেশে নয়, বরং একটি মারাত্মক সামাজিক অভিশাপ হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অনলাইন জুয়ার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের একটি বড় অংশই অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল বা মধ্যবিত্ত শ্রেণির। তারা অধিক লাভের আশায় এই ‘ডিজিটাল ফাঁদে’ পা দিয়ে সর্বস্ব হারাচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে, পারিবারিক সহিংসতা, আত্মহত্যা, চুরিচামারি ও ঋণগ্রস্ততা বেড়ে যাচ্ছে অনলাইন জুয়ার কারণে।
📣 জুয়া নয়, গড়ুন সৎ ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ।
🔍 সন্দেহজনক অনলাইন লেনদেন দেখলেই জানান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।
📢 সচেতন হোন, অন্যকেও সচেতন করুন।
📲 আরও তথ্যের জন্য নিয়মিত পড়ুন [বিজনেসটুডে২৪.কম]।