Home চট্টগ্রাম বাকলিয়ায় যুবদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে একজন নিহত

বাকলিয়ায় যুবদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে একজন নিহত

সংগৃহীত ছবি
 বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: নগরীর বাকলিয়া এলাকায় সোমবার (২৭ অক্টোবর) দিবাগত রাত আনুমানিক দুইটার দিকে জেলা যুবদলের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সাজ্জাদ (২২) নামের এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই গুরুতর অবস্থায় নিলাম করা হয়; পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।

পুলিশ ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি শুরু হয় ব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে। নিহত সাজ্জাদ ছিলেন নগর যুবদলের বিলুপ্ত কমিটির বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক বাদশার অনুসারী। অপরপক্ষ হিসেবে তদন্তে উঠে এসেছে নগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গাজী সিরাজ উল্লাহর অনুসারীরা।

বাকলিয়া থানার ওসি ইখতিয়ার উদ্দিন বলেন, ব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে তর্কের সূত্রপাত হয়। বিষয়টি দ্রুত উত্তেজনাপূর্ণভাবে রূপ নিলে গোলাগুলি শুরু হয়। গুলিতে একজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।

দলীয় সূত্র জানান, প্রাথমিকভাবে এমদাদুলের অনুসারী এক যুবদলকর্মী জসিমকে রাতে সিরাজ পক্ষের অনুসারী বোরহান উদ্দিন ও নজরুল ইসলাম সোহেল তুলে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। পরে জসিমকে উদ্ধার করার জন্য যাওয়ার সময় দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক ঝামেলা ও গোলাগুলি বাধে; সেই সময় সাজ্জাদ গুলিবিদ্ধ হন।

ঘটনার বিষয়ে জসিম সাংবাদিকদের বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি শাহাদাত হোসেন তার ছবি ব্যবহার করে লাগানো ‘সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজদের’ ব্যানার সরানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। আমি ব্যানারগুলো খুলে ফেলি। এর মধ্যে শাহাদাত ও সিরাজের পাশাপাশি বোরহানেরও ব্যানার ছিল। এ কারণে বোরহানরা আমাকে তুলে নিয়ে মারধর করে। পরে আমাকে আটকানোর খবর ছড়ালে এমদাদুলের অনুসারীরা মোকাবিলায় এসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং সংঘর্ষের সময় গুলি চালানো হয়।

নিহতের পরিবারে শোকের ছায়া দেখা যায়। নিহত সাজ্জাদের মা ফরিদা বেগম বলেন, “আমার ছেলেকে কেন গুলি করা হলো? আমি তার খুনিদের বিচারের দাবি রাখি।” নিহতের ভাই মোহাম্মদ ইমরান বলেন, “আমার ভাই ছাত্রদলের রাজনীতি করত। আমরা তার খুনিদের ফাঁসি চাই।”

এদিকে এমদাদুল হক বাদশা সাংবাদিকদের বলেন, মেয়র শাহাদাতের নির্দেশে ব্যানার সরিয়ে নেওয়ার কারণে বোরহানরা জসিমকে তুলে নেয়। পরে আমরা তাকে ছাড়া গেলে তারা গুলি চালায় বলে তাদের উপর অভিযোগ করেছেন তিনি।

পুলিশ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে কাজ করছে এবং আঘাতপ্রাপ্তদের হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। সদরঘাটা হাসপাতাল ও জেলা সদর হাসপাতালে যারা ভর্তি হয়েছেন তাদের পরিচয় ও অবস্থার খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রশাসনিক ও পুলিশি দিক থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চলছে।

স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে ও সাধারণ জনমনে এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ দেখা গেছে। ঘটনার সঠিক কারণ ও দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে পুলিশ-বাহিনী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলে সূত্রে জানা গেছে।