আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
সিনসিনাটি, যুক্তরাষ্ট্র: সেন্ট জেভিয়ার হাই স্কুলের শিক্ষা সহায়ক কেন্দ্রের সাবেক প্রধান এমিলি নাটলির (৪২) বিরুদ্ধে ১৭ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের ঘটনায় আদালত আজ চূড়ান্ত রায় দেবেন। হ্যামিলটন কাউন্টি কমন প্লিজ আদালতের বিচারক জেনিফার ব্রাঞ্চ আজ মঙ্গলবার নাটলির শাস্তির মেয়াদ নির্ধারণ করবেন।
২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে স্কুল প্রশাসনের কানে পৌঁছায় যে, এমিলি নাটলি একজন ছাত্রের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে জড়িয়েছেন। পরে ওই ছাত্র নিজেই স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানান যে, নাটলি নিয়মিত তাকে যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা পাঠাতেন, নগ্ন ছবি পাঠাতেন এবং চারবার শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন। সে সময় ছাত্রটির বয়স ছিল ১৭ বছর। ঘটনা ঘটে ২০২৩ সালের শেষার্ধে।
আদালতের দলিল অনুযায়ী, ছাত্রটি সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে নাটলি আত্মহত্যার হুমকি দেন এবং তাকে বিষয়টি গোপন রাখার জন্য অর্থও দেন।
২০২৪ সালের ১১ অক্টোবর স্কুল কর্তৃপক্ষ নাটলিকে বরখাস্ত করে। পরে নভেম্বর মাসে তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে নাটলি যৌন নিপীড়নের অভিযোগে দোষ স্বীকার করেন।
ওহাইও আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে, তবে কারাদণ্ড বাধ্যতামূলক নয়।
প্রসিকিউশনের দাবি, নাটলি কেবল ওই ছাত্রই নয়, আরও কয়েকজনকে একই কৌশলে “গ্রুমিং” করেছিলেন। তারা পাঁচ বছরের কারাদণ্ড চেয়ে বিচারকের কাছে আবেদন করেছেন।
শিক্ষকেরা কী শাস্তি পেয়েছিলেন পূর্বে:
২০১৩ সালে কোলেরেইন হাই স্কুলের শিক্ষক জুলি হাউটজেনরোডার পেয়েছিলেন ২ বছরের সাজা।
২০১৪ সালে ডেটার হাই স্কুলের শিক্ষক মাইকেল জনসন পেয়েছিলেন ৩ বছরের সাজা।
২০১৫ সালে নিউ মায়ামি হাই স্কুলের শিক্ষক জাস্টিন ম্যাডেন পেয়েছিলেন ৩ বছরের সাজা।
প্রসিকিউটরের বক্তব্য অনুযায়ী, নাটলি কোনও অনুশোচনা দেখাননি। তিনি পুরো দায় শিক্ষার্থীর ওপর চাপিয়ে দিয়েছেন এবং বলেছেন, ছেলেটিই সম্পর্ক শুরু করেছে। অথচ পাঠানো বার্তাগুলোতে দেখা যায়, নাটলিই প্রথম তাকে “কিউট” বলেন, চুমুর পরদিন পাঠান—”আজ একটা ভাল কাউচ ডে হতো… বললামই তো।”
ছাত্র ও অভিভাবকদের আবেদন: তারা নাটলির সর্বোচ্চ ১০ বছরের শাস্তি দাবি করেছেন। প্রসিকিউটর এলিস ডিটার্স বলেন, “এই অপরাধের পুরো দায় নাটলির। তিনি ক্ষমতাশালী প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে অসহায় ছাত্রটির ওপর কর্তৃত্ব খাটিয়ে অপরাধ করেছেন।”
প্রতিরক্ষা পক্ষের বক্তব্য:
নাটলির আইনজীবী জো সুহরে তার পক্ষে আবেদন করেছেন যেন তাকে কারাগারে না পাঠিয়ে প্রোবেশনে রাখা হয়। তিনি দাবি করেছেন, নাটলি মানসিক অসুস্থতা, মাদকাসক্তি ও অতীতের যৌন নির্যাতনের শিকার ছিলেন। তার ভাইয়ের মৃত্যু, বিবাহ বিচ্ছেদ এবং মানসিক চাপে তিনি এই আচরণে লিপ্ত হন।
নাটলি বর্তমানে একটি থেরাপি প্রোগ্রামে আছেন, যা ২০২৭ সালে শেষ হবে। তিনি আদালতে চিঠিতে লিখেছেন, “আমি যা করেছি তা আমাকে লজ্জায় অসুস্থ করে তোলে। আমি প্রতিদিন ভাবি, আমার আচরণ কত মানুষের জীবন ধ্বংস করেছে।”
আজ বিচারক জেনিফার ব্রাঞ্চ নাটলির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবেন—কারাগার না কি চিকিৎসা ও পর্যবেক্ষণের সুযোগ।