বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. এরশাদ হালিমকে পুরুষ শিক্ষার্থীদের যৌনভাবে হয়রানির অভিযোগে পুলিশ আটক করেছে। বৃহস্পতিবার রাত প্রায় ১১টার দিকে শেওড়া পাড়ায় তার বাসায় অভিযান চালিয়ে মিরপুর মডেল থানার পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়। বর্তমানে তিনি থানায় জিজ্ঞাসাবাদে রয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ জানান, অধ্যাপক ক্যাম্পাসের বাইরে থাকায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদে নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতির প্রয়োজন হয়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতোমধ্যেই এই ঘটনার বিষয়ে অবগত রয়েছে।
পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি রসায়ন বিভাগের কয়েকজন ছাত্র অভিযোগ করেন যে, পরীক্ষা সংক্রান্ত সমস্যার কথা বলে অধ্যাপক তাদের বাসায় ডেকে নিতেন। অভিযোগ রয়েছে, সেখানে তিনি রুমের আলো নিভিয়ে দরজা-জানালা বন্ধ করে শিক্ষার্থীদের কাছে শারীরিক স্পর্শ দাবি করতেন এবং জোরপূর্বক শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতেন।
একজন শিক্ষার্থী জানান, তাকে পরীক্ষার সহায়তার আশ্বাস দিয়ে বাসায় ডেকে শারীরিকভাবে আক্রমণাত্মক আচরণ করা হয়েছিল। ভয়ভীতি দেখিয়ে বিষয়টি গোপন রাখতে বাধ্য করার কথাও উল্লেখ করেছেন। ঘটনার পর শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার বিষয়টি তিনি জানিয়েছেন।
অপর একজন শিক্ষার্থী জানান, পরীক্ষাসংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অধ্যাপক তাকে একাধিকবার বাসায় ডেকে নেন এবং একা পেয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত শারীরিক স্পর্শ করেন। তিনি বাধা দিলে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হন। এ ঘটনায় তিনি স্বাভাবিকভাবে ক্লাসে অংশ নিতে পারছেন না।
উল্লেখযোগ্যভাবে, একাধিক ভুক্তভোগীর অভিযোগ সামনে আসার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত শুরু করেছে। মিরপুর মডেল থানা পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের সত্যতা যাচাই ও পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তদন্ত চলছে।
সাধারণের প্রতিক্রিয়া:
ঘটনার খবর প্রকাশের পর সামাজিক মাধ্যমে জনসাধারণ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনেকেই বলছেন, “শিক্ষকদের এমন আচরণ অগ্রহণযোগ্য। শিক্ষার্থীরা নিরাপদে পড়াশোনা করতে পারা উচিত।” এক জন মন্তব্য করেছেন, “যদি অভিযোগ সত্য হয়, তাহলে কঠোর শাস্তি হওয়া দরকার। শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশ্ববিদ্যালয়কে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে।”
অনেকে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন এবং শিক্ষকরা তাদের অবস্থান দখল করে এমন অনৈতিক আচরণে লিপ্ত হলে তা শাস্তিযোগ্য হতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, তারা ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের মানসিক সহায়তা প্রদান ও ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যক্রম ত্বরান্বিত করবে।










