বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, রংপুর: রংপুর-সৈয়দপুর মহাসড়কের সংস্কারকাজে ব্যাপক অনিয়ম ধরা পড়েছে সেনাবাহিনীর নিয়মিত টহলে। রংপুর চাকঘর থেকে তারাগঞ্জের চিকলী বাজার পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারে চুক্তিমতো পরিমাণে পাথর না দিয়ে প্রতিটি স্কয়ার মিটারে পাঁচ কেজি করে পাথর কম দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেনাবাহিনীর ৬৬ ডিভিশনের আওতাধীন ৩৪ বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটি টহলদল সরেজমিনে এই অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে।
গত বুধবার লেফট্যানেন্ট নাজমুলের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর দলটি সিটি মোড় এলাকায় পরিদর্শনে গেলে তারা রাস্তার গঠন ও উপকরণ পরীক্ষা করে এই অনিয়ম শনাক্ত করে। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান।
সওজ সূত্র জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের আওতায় রংপুর মেডিক্যাল মোড় থেকে পাগলাপীর বাজার, শলেয়াশাহ বাজার থেকে বরাতি সেতু, তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তারাগঞ্জ সেতু এবং তকনাগঞ্জ বাজার থেকে চিকলী বাজার পর্যন্ত মোট ১৭ কিলোমিটার মহাসড়কে ডিবিএসটি পদ্ধতিতে সংস্কারকাজ চলছে। বরাদ্দ ধরা হয়েছে প্রায় ২৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা। চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি কাজ পায় রাজশাহীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডন এন্টারপ্রাইজ। এখন পর্যন্ত তারা ১০ কিলোমিটার সড়কে কাজ সম্পন্ন করেছে বলে দাবি করেছে।
চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি স্কয়ার মিটারে ২৩ কেজি পাথর ব্যবহারের কথা থাকলেও বাস্তবে দেওয়া হয়েছে ১৮ কেজি করে—এমনটি নিশ্চিত করেছে সেনা কর্মকর্তা, প্রকৌশলী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি। অর্থাৎ ৫ কেজি পাথর কম দেওয়া হয়েছে প্রতিটি স্কয়ার মিটারে।
এই বিষয়ে ডন এন্টারপ্রাইজের প্রকল্প ব্যবস্থাপক শাহিনুর রহমান জানান, ‘সেনাবাহিনীর পরিমাপে কম পাওয়া গেছে ঠিকই, তবে কাজটি সড়ক ও জনপথের তত্ত্বাবধানে করা হয়েছে। পুরো সড়কে নয়, মাত্র ৮০০ মিটার এলাকায় এমন অনিয়ম হয়েছে। আমরা সেটা পুনরায় ঠিক করে দেব।’
নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘ডিজাইনে যা ছিল, সেভাবে কাজ হওয়ার কথা। তবে দীর্ঘ এলাকায় কিছুটা তারতম্য হতেই পারে। আমাদের তদারকির লোকজনও রয়েছেন।’
তবে সংশ্লিষ্টদের বক্তব্যের পরও সেনাবাহিনীর হাতে অনিয়ম ধরা পড়া সড়ক উন্নয়ন কার্যক্রম নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। বড় অঙ্কের বরাদ্দে দুর্বল মানের কাজ হলে জনভোগান্তি যেমন বাড়বে, তেমনি রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয়ও হবে মারাত্মক।