বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, পটুয়াখালী: বঙ্গোপসাগরে কুয়াকাটা উপকূলে স্থানীয় জেলে আব্দুল মান্নান মাঝির জালে ধরা পড়েছে বিরল প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ ‘লায়নফিশ’। মাছটি স্থানীয়ভাবে ‘বাঘা’ বা ‘রাওয়া’ মাছ নামেও পরিচিত। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর পাখনায় থাকা বিষের কারণে এটি গভীর সাগরের ‘রঙিন আতঙ্ক’ হিসেবে পরিচিত।
সোমবার (৩ নভেম্বর) মহিপুর মৎস্য বন্দরের মুন্নি ফিশ আড়তে মাছটি আনা হলে এর রঙিন দাগ, কাঁটাযুক্ত লম্বা পাখনা ও অদ্ভুত শারীরিক গঠন দেখে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক কৌতূহল সৃষ্টি হয়। আড়তে মাছটি প্রদর্শনের সময় শতাধিক মানুষ ভিড় করেন।
জেলে আব্দুল মান্নান মাঝি জানান, “গত পরশু গভীর সমুদ্রে জাল ফেলায় অন্যান্য মাছের সঙ্গে এই অপরিচিত মাছটিও ধরা পড়ে। পরে শুনেছি এটি বিষাক্ত।”
মুন্নি ফিশ আড়তের ম্যানেজার হিরন বলেন, “প্রথমে আমরা সাধারণ মাছ মনে করেছিলাম। পরে দেখলাম রঙিন দাগ এবং পাখনার কাঁটার মতো লম্বা গঠন। তখনই বুঝতে পারলাম এটি অচেনা ও বিরল প্রজাতির কিছু।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, লায়নফিশ সাধারণত ভারত মহাসাগর, বঙ্গোপসাগর, প্রশান্ত মহাসাগর ও লোহিত সাগরের উষ্ণ পানিতে বসবাস করে। এটি একদিকে ভয়ংকর শিকারি, অন্যদিকে পাখনার কাঁটায় থাকা বিষের কারণে ‘রঙিন আতঙ্ক’ নামে পরিচিত। ছোট মাছ ও চিংড়ি খেয়ে বেঁচে থাকা এই মাছটি দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনই অত্যন্ত বিষধর।
ওয়ার্ল্ডফিশ বাংলাদেশের গবেষণা সহকারী মো. বখতিয়ার রহমান জানান, “লায়নফিশ দেখতে সুন্দর হলেও এর পাখনার বিষ মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে তীব্র ব্যথা, ফোলাভাব এবং শ্বাসকষ্ট হতে পারে। তাই সরাসরি স্পর্শ করা ঝুঁকিপূর্ণ।”
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, “লায়নফিশের পাখনায় বিষ থাকে, যা অসতর্কভাবে ছুঁলে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে। জালে এই মাছ ধরা পড়লে জেলেদের উচিত যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করা।”
স্থানীয় জেলেদের মতে, এই ধরনের বিরল মাছ ধরা পড়া সচরাচর ঘটে না। তাই লায়নফিশ ধরা পড়া পটুয়াখাতের জেলেদের কাছে এক ধরনের সতর্কবার্তা হিসেবেও গণ্য হচ্ছে।










