বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, রাজশাহী : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ৬৩ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নারী শিক্ষার্থী তাসিন খান। তিনি ইতিমধ্যেই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন এবং ঘনিষ্ঠদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন। তবে ভোটের পরিবেশ নিয়ে তিনি কিছুটা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
তাসিন খান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। রাজশাহী মহাগরীর বাসিন্দা তাসিন নানা সামাজিক ও ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে কাজ করেছেন। বিশেষ করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে তিনি সামনের সারিতে দায়িত্ব পালন করেছেন। আন্দোলনের সময় মৃত্যুর ভয়কে জয় করার সাহসই তাকে রাকসুর ভিপি পদে প্রার্থী হওয়ার অনুপ্রেরণা দিয়েছে।
রাকসু ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত ১৪টি নির্বাচনে কোনো নারী শিক্ষার্থী প্রার্থী হননি। দীর্ঘ ৩৫ বছরের বিরতির পর এবার তাসিন একমাত্র নারী ভিপি প্রার্থী। এছাড়া ছাত্রী হলের অন্যান্য পদে কয়েকজন নারী প্রার্থীও লড়ছেন।
প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে তাসিন বলেন, “জুলাই আন্দোলনে একজন সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করতে গিয়ে মৃত্যুকে কাছ থেকে দেখেছি। স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাওয়ার পরে ভাবলাম, রাকসু নির্বাচনের ঐতিহাসিক মুহূর্তে অংশ নেওয়া উচিত।”
তিনি আরও জানান, “প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত আগেই ছিল, তবে কোন পদে লড়ব তা তখন ঠিক ছিল না। ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে আলোচনা শেষে ভিপি পদে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলাম। এখন যাদের সাড়া পাচ্ছি তারা ঘনিষ্ঠ ও দীর্ঘদিনের সংগঠনের সহকর্মী। সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া প্রচারণা শুরু হওয়ার পর বুঝতে পারব।”
ভোটের পরিবেশ নিয়ে তাসিন কিছুটা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “মতাদর্শিক দ্বন্দ্ব আছে, কিছু সংগঠন সরাসরি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। প্রশাসন এখনো তৎপর নয়। সাইবার বুলিং সেল গঠনের পরিকল্পনা আছে, তবে কার্যক্রম শুরু হয়নি। ভোটার ও প্রার্থীরা যাতে নিরাপদে সহাবস্থান করতে পারে, তা নির্বাচন কমিশনকে নিশ্চিত করতে হবে।”
রাকসুর মনোনয়নপত্র বিতরণ হয়েছে ২৪-২৮ আগস্ট। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৪ সেপ্টেম্বর। ভোট গ্রহণ নির্ধারিত ২৫ সেপ্টেম্বর। বহুল প্রতীক্ষিত এই নির্বাচনে তাসিনসহ প্রার্থীদের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস দেখা যাচ্ছে।
তাসিন খানের প্রার্থীতা কেবল নারীর জন্য নয়, বরং রাকসুর নির্বাচনে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করার এক সাহসী পদক্ষেপ। দীর্ঘ সময় ধরে লিঙ্গ বৈষম্য নির্বাচনী রাজনীতিতে প্রভাব ফেললেও এবার শিক্ষার্থী সমাজে এটি পরিবর্তনের সূচনা হতে পারে। ভোটের নিরাপদ ও স্বচ্ছ পরিবেশ নিশ্চিত করা প্রশাসনের মূল দায়িত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে।










