বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা:
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর ও শুল্ক বিভাগের একাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, ঘুস গ্রহণ এবং রাজস্ব ফাঁকির সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের মহাসচিবসহ পাঁচ জন শীর্ষ কর্মকর্তা।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে যাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে তারা হলেন:
- কাস্টমস এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট (ঢাকা পূর্ব) কমিশনার কাজী মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন
- বেনাপোল স্থল বন্দর কমিশনার মো. কামরুজ্জামান
- উপকর কমিশনার (সার্কেল ৭, রাজশাহী) মো. মামুন মিয়া
- আয়কর গোয়েন্দা ইউনিটের অতিরিক্ত কর কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের মহাসচিব সেহেলা সিদ্দিকা
- কর পরিদর্শক (কর অঞ্চল-২) লোকমান আহমেদ।
দুদকের অভিযোগ অনুসারে, এনবিআরের কিছু অসাধু কর্মকর্তা করদাতাদের সঙ্গে গোপনে আঁতাত করে মোটা অংকের ঘুসের বিনিময়ে কর কমিয়ে দেন। এভাবে সরকার প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে। আবার কেউ কেউ ঘুস না পেয়ে কর ফাঁকির অভিযোগ এনে হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিশেষভাবে আলোচনায় এসেছে কর ফেরত প্রদানের অনিয়ম। অনেক করদাতা আগাম বা বেশি কর দেন। নিয়ম অনুযায়ী এই টাকা ফেরত পাওয়ার কথা থাকলেও, অভিযোগ রয়েছে, করের বাড়তি অর্থ ফেরত পেতে হলে করদাতাকে আবার ঘুস দিতে হয়। কখনও কখনও এ ঘুসের পরিমাণ ফেরত টাকার অর্ধেক পর্যন্ত গড়ায়। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিজেরা এর মাধ্যমে অবৈধ অর্থ উপার্জন করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এছাড়াও, দীর্ঘদিন ধরেই এনবিআরের বিভিন্ন স্টেশনে কর্মরত অবস্থায় অভিযুক্তরা নানা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগসাজশে শুল্ক, ভ্যাট ও ক্ষেত্রবিশেষে আয়কর ফাঁকির সুযোগ করে দিয়েছেন বলে জানা যায়। অনেক ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নিয়ে নিজেরা লাভবান হয়েছেন এবং রাষ্ট্রকে রাজস্ব ক্ষতির মুখে ঠেলে দিয়েছেন। এসব অপরাধ জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের আওতায় পড়ে।
দুদক জানিয়েছে, অভিযোগ যাচাই ও প্রাথমিক তথ্য বিশ্লেষণ শেষে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করা হচ্ছে। অভিযুক্তদের ব্যাখ্যা চাওয়া হতে পারে এবং অপরাধের প্রমাণ মিললে তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হবে।
সিটিজেনদের প্রতি আহ্বান, এই ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সচেতন থাকুন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করুন।