Home পরিবেশ থানচি থেকে দুইটি রাজ ধনেশ পাখি উদ্ধার

থানচি থেকে দুইটি রাজ ধনেশ পাখি উদ্ধার

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, বান্দরবান: বান্দরবানের দুর্গম থানচি উপজেলার রেমাক্রি এলাকা থেকে বিলুপ্তপ্রায় দুইটি রাজ ধনেশ পাখি উদ্ধার করেছে বনবিভাগ। বৃহস্পতিবার সকালে পাখিগুলোকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বন বিভাগ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, রেমাক্রি ইউনিয়নের গভীর পাহাড়ি অরণ্যে এক পাহাড়ি বাসিন্দার বাড়িতে বিক্রির উদ্দেশ্যে আটকে রাখা হয়েছিল দুটি রাজ ধনেশ পাখি। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বনবিভাগের সদস্যরা পাখিগুলো উদ্ধার করেন। উদ্ধারকৃত পাখিগুলো আকারে ছোট এবং শারীরিকভাবে দুর্বল অবস্থায় ছিল। পরে সেগুলো থানচি থেকে জেলা সদরের বনবিভাগ কার্যালয়ে আনা হয়।

বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর পাখিগুলোকে সুরক্ষিত পরিবেশে রাখার জন্য ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে পাঠানো হয়। পার্ক কর্তৃপক্ষ এখন থেকে এই পাখিগুলোর স্বাস্থ্য, খাদ্য ও বাসস্থান পর্যবেক্ষণ করবে।

এ বিষয়ে বান্দরবানের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুর রহমান জানান, বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের অংশ হিসেবে এ ধরনের অভিযান নিয়মিতভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “বান্দরবানে দ্রুত গতিতে সীমান্ত সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে। পাশাপাশি বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় চারটি নতুন বন অফিস স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে সীমান্ত এলাকার বন ও বন্যপ্রাণী অনেকটাই নিরাপদ থাকবে।”

উল্লেখ্য, রাজ ধনেশ একটি বিরল ও বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির পাখি, যাদের বিশাল ঠোঁট এবং গলায় থলের মতো গঠন তাদের সহজেই আলাদা করে চিনিয়ে দেয়। মূলত গহীন অরণ্যে এদের বসবাস। প্রাকৃতিক বাসস্থান ধ্বংস এবং চোরাশিকারিদের কারণে এ প্রজাতিটি চরম হুমকির মুখে পড়েছে।

এর আগে গত বছরও চট্টগ্রামের চন্দনাইশ ও বাঁশখালী থেকে একাধিক রাজ ধনেশ পাখি উদ্ধার করা হয়। চন্দনাইশে শ্যামলী পরিবহনের একটি বাসে পাচারকালে দুইটি পাখি উদ্ধার হয় এবং এক পাচারকারীকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে চার মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একইভাবে বাঁশখালীর গুণাগরি থেকে চারটি পাখি উদ্ধারের ঘটনায় দুই পাচারকারীকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

বন্যপ্রাণী রক্ষা ও পরিবেশ সংরক্ষণের স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বনবিভাগের এমন তৎপরতা জনসচেতনতা তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা।