Home অন্যান্য রাষ্ট্রীয় সম্পদ জনগণের আমানত: ধ্বংসকারীদের ছাড় নয়

রাষ্ট্রীয় সম্পদ জনগণের আমানত: ধ্বংসকারীদের ছাড় নয়

ছবি: এ আই

মন্তব্য প্রতিবেদন

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে ট্রেনের লাইন উপড়ে ফেলে যে নাশকতা চালানো হয়েছে, তা কোনো সুস্থ রাজনৈতিক আচরণের মধ্যে পড়ে না। ট্রেনের ইঞ্জিনসহ দুই বগি লাইনচ্যুত হওয়ার এই ঘটনায় শত শত মানুষের প্রাণহানির ঝুঁকি ছিল। শুধুমাত্র রাজনৈতিক মনোনয়ন বা অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে ২০ ফুট রেললাইন সরিয়ে ফেলা কিংবা স্টেশনের সিগন্যাল সিস্টেম পুড়িয়ে দেওয়া সরাসরি গণহত্যা চেষ্টার শামিল।

রেলপথ কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়: রেলওয়ে একটি রাষ্ট্রীয় সেবা সংস্থা, যা দেশের সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত ট্যাক্সের টাকায় চলে। কোনো দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটানোর জায়গা রেলপথ হতে পারে না। এই ধ্বংসযজ্ঞের ফলে যে বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, তা শেষ পর্যন্ত জনগণের পকেট থেকেই যাবে।

জীবনের ওপর সরাসরি হুমকি: একটি যাত্রীবাহী ট্রেন যখন পূর্ণ গতিতে চলে, তখন রেললাইন উপড়ে রাখা মানে হলো পরিকল্পিতভাবে মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া। একে ‘আন্দোলন’ বলা আন্দোলন শব্দটির অবমাননা; এটি স্পষ্টতই সন্ত্রাসবাদ।

অর্থনৈতিক স্থবিরতা: ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হওয়া মানে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান ও জরুরি কাজে ব্যাঘাত ঘটানো। স্টেশনের কম্পিউটার ও সিগন্যাল সিস্টেম ধ্বংস করার ফলে পুরো রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ে, যার প্রভাব পড়ে সাধারণ জনজীবনে।

এই ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার রাজনৈতিক আপস না করে নিচের পদক্ষেপগুলো নেওয়া জরুরি:

স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে বিচার: রেললাইন উপড়ে ফেলা এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদে অগ্নিসংযোগকারীদের সাধারণ আসামী হিসেবে নয়, বরং বিশেষ ক্ষমতা আইনের আওতায় দ্রুততম সময়ে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

ক্ষতিপূরণ আদায়: শুধু কারাদণ্ড নয়, যে দল বা গোষ্ঠীর কর্মীরা এই ক্ষতি করেছে, তাদের কাছ থেকেই ধ্বংসকৃত সম্পদের বাজারমূল্য অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ আদায় করার বিধান করতে হবে।

সরাসরি হুকুমদাতাদের গ্রেপ্তার: যারা মাঠ পর্যায়ে এই ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে তাদের পাশাপাশি, যাদের মদদে বা উস্কানিতে এই ঘটনা ঘটেছে, সেই নেতাদেরও আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

 রাজনীতি হওয়া উচিত জনগণের কল্যাণের জন্য, জনগণের জানমালের ক্ষতি করে নয়। যারা রাজনৈতিক স্বার্থে রেলের স্লিপার তুলে নেয় কিংবা স্টেশনে আগুন দেয়, তারা কোনো দলের কর্মী হওয়ার আগে সমাজের শত্রু। প্রশাসনকে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে এসব ‘সম্পদ ধ্বংসকারী’ দানবদের দমন করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ রাষ্ট্রীয় সম্পদে হাত দেওয়ার সাহস না পায়।