বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: বিশ্বব্যাপী গাড়ির বাজারে নতুন ব্র্যান্ডেড গাড়ির পাশাপাশি জাপানের রিকন্ডিশনড গাড়ি দীর্ঘদিন ধরেই বিশেষ জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে। বিশেষত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে স্বল্পমূল্যে মানসম্মত যানবাহনের চাহিদা ক্রমবর্ধমান হওয়ায় জাপান থেকে রিকন্ডিশনড গাড়ি আমদানি বাণিজ্য এখনো স্থিতিশীল গতিতে চলছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ব অর্থনীতির মন্দা, জাহাজভাড়া বৃদ্ধি ও বৈদেশিক মুদ্রার ওঠানামা এ বাজারে কিছুটা প্রভাব ফেলছে।
শিল্প বিশ্লেষকদের মতে, জাপানের রিকন্ডিশনড গাড়ি রপ্তানি মূলত এশিয়া, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দিকে বেশি কেন্দ্রিত। বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, কেনিয়া, তানজানিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাত এ খাতে বড় বাজার হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে রিকন্ডিশনড গাড়ি বাজারে জাপানি গাড়ির দখল প্রায় ৮০ শতাংশেরও বেশি। কারণ, এ গাড়িগুলো ব্যবহারে আরামদায়ক, জ্বালানি সাশ্রয়ী এবং টেকসই।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক চ্যালেঞ্জ সামনে এসেছে। বৈশ্বিক শিপিং খরচ বেড়ে যাওয়ায় প্রতিটি গাড়ি আমদানির ব্যয় গড়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। একইসঙ্গে ডলার সংকট এবং বিভিন্ন দেশে আমদানি শুল্ক কাঠামো পরিবর্তনের কারণে আমদানিকারকদের চাপ আরও বেড়েছে। বাংলাদেশেই কয়েক মাস ধরে আমদানিকারকরা নতুন গাড়ি খোলার এলসি করতে পারছেন না পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে। এর ফলে স্থানীয় বাজারে রিকন্ডিশনড গাড়ির দাম বেড়ে গেছে এবং বিক্রিও কিছুটা ধীর হয়েছে।
অন্যদিকে, জাপান সরকার পুরনো গাড়ি ব্যবস্থাপনায় কঠোর নীতি গ্রহণ করায় দেশটির ভেতরে গাড়ি মালিকরা নির্দিষ্ট সময়ের পর গাড়ি ব্যবহারে নিরুৎসাহিত হন। এ সুযোগেই রপ্তানি ব্যবসা সক্রিয় থাকে। প্রতিনিয়ত হাজারো গাড়ি দেশটিতে নিলামে ওঠে এবং আন্তর্জাতিক ক্রেতারা অনলাইনের মাধ্যমে অংশ নিয়ে গাড়ি সংগ্রহ করেন। এ প্রক্রিয়াই রপ্তানি বাণিজ্যকে এখনো সচল রেখেছে।
বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাময়িক ধাক্কা থাকলেও জাপানি রিকন্ডিশনড গাড়ির বৈশ্বিক চাহিদা কমবে না। বরং পরিবেশবান্ধব হাইব্রিড গাড়ি ও সাশ্রয়ী মডেলের চাহিদা আগামী বছরগুলোতে আরও বাড়বে। তবে রপ্তানিকারক ও আমদানিকারক উভয় পক্ষকেই নতুন বাস্তবতায় খরচ কমানো ও বিকল্প বাজার খুঁজে বের করার কৌশল নিতে হবে।