জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি: পর্ব- ৪ে)
অর্থনীতি, পরিবেশ ও কর্মসংস্থান: রুফটপ সোলারের বড় পরিবর্তন
কামরুল ইসলাম, ঢাকা: বাংলাদেশে রুফটপ সোলার কর্মসূচি শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াবে না, বরং দেশের অর্থনীতি, পরিবেশ এবং সামাজিক কাঠামোয় ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। সরকার আশা করছে, এই কর্মসূচির মাধ্যমে বছরে প্রায় ৪,২০০ কোটি টাকা খরচ সাশ্রয় সম্ভব হবে, এবং উৎপাদিত সৌরবিদ্যুতের আর্থিক মূল্য দাঁড়াবে প্রায় ২৫,২০০ কোটি টাকা।
পরিবেশগত প্রভাব
কর্মসূচির বাস্তবায়নের ফলে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বছরে প্রায় ১৮ লাখ টন কমবে। এতে কার্বন নিঃসরণও বছরে প্রায় ২৫ লাখ টন হ্রাস পাবে, যা দেশের পরিবেশবান্ধব নীতি বাস্তবায়নে বড় অবদান রাখবে। পাশাপাশি, কার্বন ক্রেডিট বিক্রির মাধ্যমে বছরে প্রায় ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় সম্ভব হবে, যা সরকারের আয়ের নতুন উৎস হিসেবে কাজ করবে।
কর্মসংস্থান সৃষ্টি
রুফটপ সোলার প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রায় ১ লাখ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এতে ইলেকট্রিক্যাল, প্রকৌশল, নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে নতুন উদ্যোক্তা এবং দক্ষ জনশক্তির চাহিদা বাড়বে। বিশেষ করে যুবসমাজকে প্রযুক্তি ও নবায়নযোগ্য শক্তিতে যুক্ত করার একটি বড় সুযোগ তৈরি হবে।
কর ছাড় ও প্রণোদনা
সরকার এই উদ্যোগকে উৎসাহিত করতে ২০২৫-২৬ সালের বাজেটে সোলার প্যানেল, ইনভার্টার ও ব্যাটারির কর কমিয়ে মাত্র ১ শতাংশ করেছে। এছাড়া, সোলার থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ১০ বছরের আয়কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য আকর্ষণীয় প্রণোদনা হিসেবে কাজ করবে।
দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব
রুফটপ সোলার কর্মসূচি দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ও শক্তির স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। এটি শুধু সরকারি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নয়, পুরো সমাজে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়াবে। শহর ও গ্রামে সরকারি ভবন, স্কুল, কলেজ এবং হাসপাতালের ছাদকে শক্তির নতুন উৎসে রূপান্তর করে বাংলাদেশ টেকসই, সবুজ এবং স্থিতিশীল শক্তির দিকে এগোবে।
পরবর্তী পর্বে সিরিজে বিশ্লেষণ করা হবে সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগের বিশদ প্রভাব, উদ্যোক্তা এবং স্থানীয় জনগণের জীবনে সৌরশক্তির সামাজিক ও অর্থনৈতিক দিকগুলো।










