বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, গাজীপুর: গাজীপুরে অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে ঢাকাগামী ‘পঞ্চগড় এক্সপ্রেস’ ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কায় একটি ডাম্প ট্রাক দুমড়ে-মুচড়ে যায়, ঘটনায় দুইজন নিহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনা ঘটে মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) রাত দেড়টার দিকে মহানগরীর দাক্ষিণখানে। নিহতদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. নাদিরুজ্জামান জানান, “রাত দেড়টার দিকে ট্রাকটি অরক্ষিত রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হন। পরে শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও একজনের মৃত্যু হয়। মরদেহ দুটি বর্তমানে হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।”
অরক্ষিত রেলক্রসিং: ঝুঁকি ও প্রভাব
অরক্ষিত রেলক্রসিং হলো এমন একটি রেলপথ পারাপারের স্থান যেখানে কোনো গেট, রেল সিগন্যাল বা নিরাপত্তা কর্মী নেই। বাংলাদেশে প্রায় ৫০০টির বেশি অরক্ষিত রেলক্রসিং রয়েছে। এসব ক্রসিংয়ে দুর্ঘটনা ঘটার ঝুঁকি বেশি। বিশেষ করে রাতের অন্ধকারে বা কম দৃশ্যমান অবস্থায় যানবাহন চালকদের জন্য এসব ক্রসিং অত্যন্ত বিপজ্জনক।
অতীতের দুর্ঘটনার উদাহরণ
- ২০২৩ সালের আগস্ট: নরসিংদীতে একটি অরক্ষিত ক্রসিংয়ে ট্রেনের সঙ্গে একটি ছোট ট্রাকের ধাক্কায় তিনজন নিহত হন।
- ২০২২ সালের মার্চ: কিশোরগঞ্জে অরক্ষিত ক্রসিং পার হওয়ার সময় একটি মোটরসাইকেল ধাক্কায় নিহত হন দুইজন।
- ২০২১ সালের নভেম্বর: ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে অরক্ষিত ক্রসিংতে ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কায় একটি ভ্যান দুমড়ে-মুচড়ে যায়, ঘটনায় চারজন আহত হন।
প্রশাসনের পদক্ষেপ
রেলওয়ে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, দুর্ঘটনা রোধে অরক্ষিত ক্রসিংগুলোতে সতর্কতা চিহ্ন, ফ্ল্যাশিং লাইট, রেলগেট এবং সিগন্যাল ব্যবস্থা দ্রুত সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন। এছাড়া, চালকদের সতর্কতা এবং ট্রেনের গতিবেগ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য নিয়মিত প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
স্থানীয়রা মনে করছেন, দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়া অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ের ঝুঁকি দূর করা সম্ভব নয়।