আইটি ডেস্ক:
কেএএমসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. আদেল তাশ আরব নিউজকে জানান, এই নতুন রোবটিক সার্জারির সূচনা কেএএমসি’কে দেশের অন্যতম অগ্রণী ও বিশেষায়িত চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করলো। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে রোগীদের জন্য নিরাপদ ও উচ্চমানের চিকিৎসা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
প্রথম রোবটিক সার্জারির রোগী ছিলেন ত্রিশোর্ধ্ব এক ব্যক্তি, যার বাম ফুসফুসে উপরের ও নিচের খন্ডে সিস্ট থাকায় শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। অস্ত্রোপচারে ওই সিস্টগুলো সরিয়ে ফেলা হয় এবং ফুসফুসকে বুকে স্থায়ীভাবে সংযুক্ত করা হয়। সার্জারিটি পরিচালনা করেন ড. মুতেব আল-জায়েদি, যিনি থোরাসিক ও গ্যাস্ট্রিক সার্জারির বিশেষজ্ঞ। তাকে সহায়তা করেন ড. আয়মান জাফার এবং এনেস্থেশিয়া ও নার্সিং বিভাগের সদস্যরা।
ড. তাশ জানান, রোবটিক সার্জারির সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, মাত্র ১ সেন্টিমিটারের ছোট্ট ছিদ্র দিয়ে অপারেশন সম্পন্ন করা সম্ভব, যেখানে প্রচলিত পদ্ধতিতে ১০ সেন্টিমিটারেরও বেশি কাটা লাগে। ফলে রক্তপাত, ব্যথা ও সংক্রমণের সম্ভাবনা কমে যায় এবং রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পারেন।
ডা ভিঞ্চি এক্সআই প্রযুক্তির মাধ্যমে সার্জন একটি কেন্দ্রীয় কনসোল থেকে ৩ডি ভিশনে অপারেশন পরিচালনা করেন। এতে রয়েছে তিনটি অংশ, সার্জনের কনসোল, রোবটিক বাহু সম্বলিত পেশেন্ট কার্ট এবং ভিশন কার্ট। পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণরূপে সার্জনের নিয়ন্ত্রণে থেকে সম্পন্ন হয়।
এই প্রযুক্তির দ্বিতীয় প্রয়োগ হয় জরায়ু ক্যানসারে আক্রান্ত এক রোগীর ক্ষেত্রে, যিনি অপারেশনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেন।
বর্তমানে কেএএমসি পরিকল্পনা করেছে, এই প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে ইউরোলজি, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল, হার্ট ও ফুসফুসের জটিল অপারেশনসহ বারিয়াট্রিক ও অন্যান্য উন্নত সার্জারিতেও প্রয়োগ করা হবে। পাশাপাশি চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের জন্য ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তিনির্ভর প্রশিক্ষণ চালু করার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।
সৌদি ভিশন ২০৩০ অনুযায়ী স্বাস্থ্যখাতে উন্নত প্রযুক্তির প্রয়োগ এবং রোগীর অভিজ্ঞতা উন্নয়নের লক্ষ্যে এটি একটি বড় পদক্ষেপ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।