কৃষ্ণা বসু, কলকাতা: হাওড়ার নারায়ণা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল রোবটিক সার্জারিতে অর্জন করেছে এক বড় মাইলফলক। মাত্র দেড় বছরে প্রতিষ্ঠানটি সম্পন্ন করেছে এক হাজারেরও বেশি সফল রোবটিক সার্জারি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই স্বল্প সময়ের মধ্যেই রোবটিক প্রযুক্তিনির্ভর অস্ত্রোপচারে তারা দেশের অন্যতম অগ্রগামী চিকিৎসাকেন্দ্র হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে।
প্রথমদিকে এই হাসপাতালে মূলত প্রস্টেট ও গাইনিকোলজিক্যাল ক্যান্সারের চিকিৎসায় রোবটিক সার্জারি চালু করা হয়। রোগীদের ইতিবাচক সাড়া পাওয়ার পর ধীরে ধীরে হার্নিয়া, গলব্লাডারসহ বিভিন্ন সার্জারিতেও রোবটিক প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু হয়। সম্প্রতি হাসপাতালটি হার্টের বাইপাস সার্জারিও রোবটের সাহায্যে সফলভাবে সম্পন্ন করেছে, যা ভারতের চিকিৎসা অঙ্গনে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
হাসপাতালের রোবটিক সার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. পার্থপ্রতিম সেন বলেন, “প্রথমে ক্যান্সারের সার্জারি দিয়েই শুরু করেছিলাম। এখন নানা ধরনের অস্ত্রোপচার রোবটের মাধ্যমে সফলভাবে করা হচ্ছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, কোনও রোগীরই পরে জটিলতা তৈরি হয়নি। ৮ বছর বয়সী শিশু থেকে ৯৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ—সব বয়সের রোগীর জন্যই এই সার্জারি নিরাপদ।”
রোবটিক সার্জারির মূল সুবিধা হলো ব্যথা ও রক্তপাতের পরিমাণ অত্যন্ত কম। রোগী দ্রুত সেরে ওঠেন এবং সাধারণত এক থেকে দেড় দিনের মধ্যেই বাড়ি ফিরে যেতে পারেন। এছাড়া রোবটিক ক্যামেরা সাধারণ ল্যাপারোস্কোপিক ক্যামেরার তুলনায় ৪০ গুণ বেশি জুম করতে সক্ষম, ফলে চিকিৎসকরা সূক্ষ্মভাবে এবং আরও নিখুঁতভাবে অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করতে পারেন।
চিকিৎসকদের মতে, রোবটিক সার্জারির এই বাড়তি সুবিধাগুলোর কারণে বর্তমানে বহু রোগী ও তাদের পরিবার এই পদ্ধতির প্রতি আস্থা রাখছেন। হাওড়ার এই হাসপাতালের ক্রমবর্ধমান সাফল্য প্রমাণ করছে, ভবিষ্যতে ভারতে উন্নত চিকিৎসায় রোবটিক প্রযুক্তির ব্যবহার আরও বিস্তৃত হতে চলেছে।










