Home চট্টগ্রাম গহিরার লইট্টা মাছ: শুধুই খাদ্য নয়, এক সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার

গহিরার লইট্টা মাছ: শুধুই খাদ্য নয়, এক সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার

লইট্টা মাছ। ছবি সংগৃহীত

আজ বিজনেসটুডে২৪-এ প্রকাশিত ‘গহিরার লইট্টা মাছ: সমুদ্রের উপহার, রসনার আবেগ’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি আমাদের চোখ খুলে দেয় এক অনন্য জীবনের গল্পের দিকে — গহিরা গ্রামের মানুষেরা যাদের জীবিকা, সংস্কৃতি এবং আবেগ গভীরভাবে জড়িত একটি ছোট্ট মাছের সঙ্গে।

গহিরার লইট্টা মাছ কেবল একটি সামুদ্রিক খাদ্যপণ্য নয়। এটি ওই জনপদের মানুষের স্বপ্ন, শ্রম আর আত্মপরিচয়ের প্রতিনিধিত্ব করে। প্রতিদিন সূর্য ওঠার আগে সমুদ্রপানে ছুটে চলা শত শত জেলে, ঝড়-বৃষ্টিকে অগ্রাহ্য করে মাছ আহরণে নিয়োজিত নারী-পুরুষদের অবিরাম সংগ্রাম — এই গল্পগুলো আমাদের মনে করিয়ে দেয়, খাদ্যের পেছনে কত জীবনের স্পন্দন লুকানো থাকে।

বিশ্বায়নের এই যুগে, যখন অনেক ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে বাজারের চাপে, গহিরার লইট্টা মাছ টিকে আছে তার স্বতন্ত্রতা নিয়েই। দেশে তো বটেই, বিদেশের বাজারেও লইট্টার সুগন্ধ আর স্বাদ ছড়িয়ে পড়েছে, যা শুধু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনাই তৈরি করেনি, বরং একটি আঞ্চলিক পরিচিতিকেও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তুলে ধরেছে।

তবে এই অর্জন যেন কেবল গর্বের ভাসা হয়ে না থাকে। গহিরার মৎস্যসম্পদ টিকিয়ে রাখতে এখন দরকার সুনির্দিষ্ট সরকারি সহায়তা, প্রশিক্ষণ, আধুনিক সংরক্ষণ প্রযুক্তির প্রসার এবং আন্তর্জাতিক মানের রপ্তানি নীতিমালা। পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রেখে মাছ ধরা নিশ্চিত করা, শ্রমিকদের ন্যায্য পারিশ্রমিক দেওয়া এবং স্থানীয় ঐতিহ্য রক্ষার বিষয়েও পরিকল্পিত উদ্যোগ নিতে হবে।

গহিরার লইট্টা মাছের সাফল্য আমাদের মনে করিয়ে দেয়: প্রকৃত উন্নয়ন মানে শুধু অর্থ নয়, সংস্কৃতি, মানবিকতা ও ঐতিহ্যের রক্ষাও।
আমরা আশা করি, গহিরার মানুষরা যেমন ভালোবাসা নিয়ে তাদের লইট্টা মাছের ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রেখেছে, তেমনি রাষ্ট্র ও সমাজও তাদের পাশে দাঁড়াবে — যাতে তারা আরও দৃঢ়ভাবে বিশ্ব মানচিত্রে নিজেদের স্থান করে নিতে পারে।