Home রাজনীতি লক্ষ্মীপুর-১ আসনে বন্দরের বার্থ অপারেটর সেলিমকে বিএনপির গ্রিন সিগন্যাল

লক্ষ্মীপুর-১ আসনে বন্দরের বার্থ অপারেটর সেলিমকে বিএনপির গ্রিন সিগন্যাল

শাহাদাত হোসেন সেলিম

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: জাতীয় সংসদের লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ)  আসনে ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অনুমতি পেয়েছেন ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র এবং বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি বিএলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম। বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম গণমাধ্যমকে বলেন যে সেলিমকে প্রার্থী হিসেবে গ্রিন সিগন্যাল দেওয়া হয়েছে।

শাহাদাত হোসেন সেলিম চট্টগ্রাম বন্দরের বার্থ অপারেটর। তিনি এভারেস্ট এন্টারপ্রাইজের মালিক।

প্রার্থী তালিকায় শূন্য থাকা আসন এখন জোটের হাতে
গত ৩ নভেম্বর বিএনপি যখন ২৩৭ আসনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে, লক্ষ্মীপুর ১ আসনটি খালি রাখা হয়। সেই সময় থেকেই আসনটি নিয়ে জোটভিত্তিক সমঝোতার আলোচনা চলছিল। বিএনপির সংশ্লিষ্টরা জানান যে আঞ্চলিক প্রভাব ও পূর্ববর্তী ভোটব্যবহার বিবেচনা করে জোটের স্বার্থে এই আসনটি সেলিমকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

২০১৮ সালের নির্বাচনে একই কৌশল
এর আগে ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে একই আসনে সেলিমকে প্রার্থী করতে আসনটি বিএনপি ছাড় দিয়েছিল। তিনি ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ার হোসেন খানের কাছে পরাজিত হন। ওই নির্বাচনে কেন্দ্রভিত্তিক বিশ্লেষণ থেকে দেখা যায়, রামগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে সেলিম উল্লেখযোগ্য ভোট পান, যদিও শহরকেন্দ্রিক এলাকার ভোটে পিছিয়ে ছিলেন।

রামগঞ্জ আসনের ভোট কাঠামো
লক্ষ্মীপুর ১ আসনটি মূলত রামগঞ্জ উপজেলাভিত্তিক। এখানে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সংগঠিত অবস্থায় থাকলেও বিএনপির ভোটধারা ঐতিহাসিকভাবে শক্তিশালী। স্থানীয় বিশ্লেষকরা মনে করেন যে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বড় জোটের একক প্রার্থীতার কারণে ধানের শীষ ভোট আরও সুসংহত হতে পারে।

শাহাদাত হোসেন সেলিমের রাজনৈতিক ভিত্তি
ছাত্রদল দিয়ে রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করা সেলিম চট্টগ্রাম শিক্ষাঙ্গনে সক্রিয় ভূমিকার মাধ্যমে পরিচিত হন। পরে বিএনপির মূল রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে চট্টগ্রাম মহানগরে সাংগঠনিক প্রভাব বিস্তার করেন। তিনি দীর্ঘদিন চট্টগ্রাম বন্দর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ( ১৯৮৮–১৯৯৪) এবং পরে মহানগর বিএনপির যুগ্ম-সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
পরবর্তীতে দলবদল করে এলডিপি এবং এরপর বিএলডিপি প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র হিসেবে তিনি জাতীয় পর্যায়েও পরিচিত।

জোট রাজনীতিতে ভূমিকা
১২ দলীয় জোটের অন্যতম আলোচিত মুখ হিসেবে তিনি বিগত এক বছরে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক উদ্যোগ, বৈঠক এবং যৌথ বিবৃতি সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন। বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের সমালোচনা, নির্বাচনকেন্দ্রিক অবস্থান এবং গণ-অভিযোগ তুলে ধরতে তিনি সামনে ছিলেন।

বন্দর রাজনীতিতে তার অবস্থান
চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনা ও বার্থ অপারেশন ইস্যুতেও সেলিম দীর্ঘদিন বক্তব্য দিয়ে এসেছেন। ঠিকাদারি, অপারেটর নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং স্বচ্ছতা নিয়ে তাঁর মন্তব্য রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে আলোচিত হয়। এসব কারণে তাকে শুধু জাতীয় নয়, বন্দর অঞ্চলের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের কাছেও পরিচিত এক নাম হিসেবে দেখা হয়।

স্থানীয় পর্যায়ের সাড়া
লক্ষ্মীপুর ১ আসনে সেলিমের গ্রিন সিগন্যাল পাওয়ার পর জোটভুক্ত দলগুলো মাঠপর্যায়ে প্রচার কাঠামো তৈরি শুরু করেছে। বিএনপির স্থানীয় নেতারাও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের দাবি যে একক প্রার্থী থাকায় নির্বাচন প্রস্তুতি আরও সুসংহত হবে।