বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: এবার ঈদুল আযহায়, বড় পর্দায় আবার একসাথে ফিরছেন পাকিস্তানের অন্যতম জনপ্রিয় তারকা মাহিরা খান এবং হুমায়ুন সাঈদ। তাদের বহুল প্রতীক্ষিত সিনেমা লাভ গুরু দর্শকদের সামনে আসবে ৬ জুন, ২০২৫-এ। সিনেমাটি যে এক রোমান্টিক কমেডি হতে যাচ্ছে, তার আভাস পাওয়া গেছে সিনেমার ট্রেলার থেকে। তবে এটি শুধুমাত্র হাস্যরসের উপরই সীমাবদ্ধ নেই; এতে রয়েছে হৃদয়ের গভীরতা, প্রেমের জটিলতা, এবং একটু নস্টালজিয়াও।
নাদিম বেগের পরিচালনায় এবং ভাসায় চৌধুরীর লেখা এই সিনেমায় থাকবে হাস্যরস, প্রেম, এবং কিছু ভ্রান্তি, যা তার বিখ্যাত সিনেমা জওয়ানি ফির নেহি আতা-এর মতোই দর্শকদের মন জয় করবে। ট্রেলার দেখে বোঝা যায় যে “লাভ গুরু” একটি ক্লাসিক ফিল-গুড মুভি হতে চলেছে, তবে এতে থাকবে আধুনিক মিশ্রণ এবং কিছু গভীর আবেগ।
মুভিটি শুধু মাহিরা এবং হুমায়ুন সাঈদের উপস্থিতির জন্য নয়, বরং এতে আছেন আরো বহু প্রখ্যাত অভিনেতা-অভিনেত্রীও। সোহাই আলী আব্রো, মীরা সেঠি, মোমিনা ইকবাল, জাভেদ শেইখ, এবং রমশা খান সহ আরো অনেকেই মুভিটির অংশ। সলমান ইকবাল এক্সিকিউটিভ প্রডিউসার হিসেবে কাজ করছেন, এবং শহজাদ নাসীব, জারজেস সেজা সহ আরো অনেক প্রোডিউসারদের অংশগ্রহণ রয়েছে।
গল্পের পটভূমি: ট্রেলারটি শুরু হয় হুমায়ুন সাঈদের চরিত্রের, একজন আত্মঘাতী “লাভ গুরু”-এর মাধ্যমে, যিনি সোহাই আলী আব্রোর চরিত্রের বর (যে পালিয়ে যাচ্ছে) এবং তার প্রেমিকের মধ্যে বিশাল চাপ অনুভব করেন। এই সময় তার হাস্যরসাত্মক মন্তব্য, “যদি আমাকে এমন একজন ছেলের সঙ্গে পালাতে বলা হতো, তাহলে আমি তো চরম উদ্বেগ অনুভব করতাম,” হাসির সৃষ্টি করে।
তারপর, আমরা দেখতে পাই সাঈদের অনেক প্রেমের জটিলতায় জড়িয়ে যাওয়ার দৃশ্য। সিনেমায় সাঈদের বিভিন্ন মহিলাদের নাম মনে রেখে, সেই সব মহিলারা তাকে বিভিন্ন নাম দিয়ে ডাকেন, যেমন বিলাওয়াল, নওয়াজ, এবং ইমরান, যা মুভিটিতে হাস্যরস তৈরি করে।
লন্ডনে প্রেমের গল্প: মুভির এক পলক দৃশ্যে, মাহিরা খানের চরিত্র সোফিয়া খান, একজন স্থপতি, লন্ডনে আমাদের সামনে আসে। তিনি তার পছন্দের মানুষের সঙ্গে বিয়ে করতে চাইলে তার বাবা, শেইখের চরিত্র, তাঁর বিপক্ষে দাঁড়ান। হুমায়ুন সাঈদ এই পরিস্থিতিতে “লাভ গুরু” হিসেবে সমস্যা সমাধান করতে নামেন, যদিও সাঈদ তার ব্যক্তিগত নীতির বিপরীতে গিয়ে সোফিয়ার কাছাকাছি চলে আসেন।
মাহিরা ও সাঈদের মধ্যে এক দুর্দান্ত রোমান্সের উদ্রেক ঘটে, যেখানে সাঈদ তার পুরানো দুষ্টু মেজাজটি হারিয়ে সোফিয়ার প্রতি এক নতুন ধরনের অনুভূতি তৈরি করতে থাকেন। এবং তাদের রোমান্টিক মুহূর্তগুলো, যেমন একটি গরম বাতাসের বেলুনে রোমান্টিক ভ্রমণ এবং একটি নৌকায় একসাথে সময় কাটানো, দর্শকদের হৃদয় স্পর্শ করবে।
সিনেমাটোগ্রাফি ও আবেগের ডুবন্ত সুর: মুভির চিত্রগ্রহণ দারুণ, সূর্যোদিত লন্ডনের রাস্তাগুলো এবং সবুজ প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলো ক্যামেরায় সুন্দরভাবে বন্দী করা হয়েছে। মাহিরা খান সাদৃশ্য সাড়ির মধ্যে অপরূপ, আর হুমায়ুন সাঈদ একেবারে ভিন্ন এক চরিত্রে আবেগপ্রবণ, অস্থির, এবং কিছুটা ঈর্ষান্বিত। ট্রেলারটিতে আবেগের এক গভীর পরত রয়েছে, বিশেষত সেই জায়গায় যেখানে সাঈদ মাহিরাকে বলে, “আফসোস, যদি তোমাকে আগে দেখতাম…” এবং মাহিরার জবাব আসে, “কিছু কিছু কথা না বলাই ভালো।”
ক্লাইম্যাক্স এবং ভবিষ্যতের চমক: ট্রেলারটি শেষ হয়, যেখানে দেখা যায় এক মহাকাব্যিক দৃশ্যে সাঈদ জানতে পারেন যে তার হৃদয় কিছুটা বদলে গেছে। এবং সাঈদ সোফিয়াকে জিজ্ঞেস করেন, “তুমি কি আমাকে বিশ্বাস করো?” এরপর, সাঈদ বলেন, “না, কিন্তু আমার মন বদলে গেছে।” সবার হৃদয়ে বাজানো সেই করুণ গানের মাধ্যমে, এটা বোঝা যায় যে এই সিনেমার গল্প প্রেম এবং বিচ্ছেদের কিছু অজানা দিক খুলে দেবে।
এই ঈদুল আযহায় লাভ গুরু প্রত্যাশিত হতে পারে এক এক্সট্রা-অর্ডিনারি রোমান্টিক কমেডি, যার মধ্যে হাস্যরস, হৃদয়বিদারক মুহূর্ত এবং প্রচুর আবেগ রয়েছে। হুমায়ুন সাঈদ ও মাহিরা খান-এর চমৎকার রসায়ন, তারুণ্যপূর্ণ সমর্থক কাস্ট, এবং শক্তিশালী গল্পের সম্মিলনে এই সিনেমাটি এক নতুন মাইলফলক হতে চলেছে।
-সূত্র: ডন