১৪ বছর পর ফের তিলোত্তমায় রাজপুত্র
কৃষ্ণা বসু, কলকাতা: শীতের রাতেও উষ্ণতার পারদ তুঙ্গে। দীর্ঘ ১৪ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ‘সিটি অফ জয়’-এ পা রাখলেন বিশ্বজয়ী ফুটবল জাদুকর লিয়োনেল মেসি। শুক্রবার রাত আড়াইটে নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরে অবতরণ করে তাঁকে বহনকারী বিমান। বিমানবন্দর চত্বর তখন হাজারো সমর্থকের ‘মেসি, মেসি’ গর্জনে প্রকম্পিত। ২০১১ সালের পর এই দ্বিতীয়বার কলকাতায় এলেন এলএম টেন, তবে এবারের আগমন বিশ্বজয়ী অধিনায়ক হিসেবে।

তারকায় ঠাসা বিমানবন্দর
মেসি একা নন, তাঁর সঙ্গে কলকাতায় এসেছেন ইন্টার মায়ামির সতীর্থ ও প্রিয় বন্ধু লুইস সুয়ারেস এবং আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী সতীর্থ রদ্রিগো ডি’পল। এছাড়া বলিউডের বাদশা শাহরুখ খানও আলাদা ব্যক্তিগত বিমানে শহরে পৌঁছেছেন। বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার সময় কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে তাঁদের হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। গেট নম্বর চারের বাইরে অপেক্ষমাণ হাজারো জনতা প্রিয় তারকাকে একঝলক দেখার জন্য ব্যারিকেড ভেঙে ফেলার উপক্রম করে। ভারত ও আর্জেন্টিনার পতাকা হাতে সমর্থকদের উন্মাদনা ছিল চোখে পড়ার মতো।
ঠাসা কর্মসূচি ও চাঁদের হাট
মেসির এই সফরের নাম দেওয়া হয়েছে ‘গোট ট্যুর অফ ইন্ডিয়া’। কলকাতায় তাঁর সময় অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত। আজ শনিবার সকাল থেকেই শুরু হয়েছে তাঁর ব্যস্ততা।
সকাল ৯:৩০ – ১০:৩০: হোটেলে ‘মিট অ্যান্ড গ্রিট’ পর্ব।
সকাল ১০:৩০: ভার্চুয়ালি নিজের মূর্তি উন্মোচন।
সকাল ১১:১৫: হোটেল থেকে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের উদ্দেশে রওনা।
দুপুর ১২:০০ – ১২:৩০: যুবভারতীতে মূল অনুষ্ঠান। এখানে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং শাহরুখ খান। অনুষ্ঠিত হবে সেলিব্রিটি ফ্রেন্ডলি ম্যাচ ও সংবর্ধনা।
দুপুর ২টোয় হায়দরাবাদের উদ্দেশে রওনা দেবেন মেসি।
নিরাপত্তা ও ফ্যান জোন
মেসির সফর ঘিরে কলকাতায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কলকাতা ও রাজ্য পুলিশের সহায়তায় বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের প্রায় ২০০০ পুলিশকর্মী নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন। স্টেডিয়াম চত্বরে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এদিকে সল্টলেক স্টেডিয়ামের অদূরে সমর্থকদের উদ্যোগে তৈরি হয়েছে ‘হোলা মেসি ফ্যান জোন’। সেখানে মায়ামির বাড়ির আদলে তৈরি করা হয়েছে মেসির বাড়ির প্রতিকৃতি, যেখানে সপরিবারে মেসির কাট-আউট স্থান পেয়েছে।
পরবর্তী গন্তব্য
কলকাতা সফর শেষ করে মেসি হায়দরাবাদে ‘গোট কাপ’ উদ্বোধন করবেন এবং ফলকনামা প্যালেসে নৈশভোজ সারবেন। এরপর ১৪ ডিসেম্বর মুম্বইয়ে সচিন তেন্ডুলকরের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বিশেষ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। ১৫ ডিসেম্বর দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে এবং অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে কোচিং ক্লিনিকে অংশ নিয়ে তিনি ভারত ছাড়বেন।
বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলারকে কয়েক ঘণ্টার জন্য কাছে পেয়ে উৎসবে মেতেছে ফুটবলপাগল কলকাতা। ২০১১ সালে তিনি এসেছিলেন প্রতিশ্রুতিমান তারকা হিসেবে, আর ২০২৫-এ ফিরলেন বিশ্বজয়ী কিংবদন্তি হয়ে।










