বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: আন্তর্জাতিক নেতৃত্বের নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে সমগ্র বিশ্বের নাগরিকদের উদ্যোগে শুরু হওয়া প্রতীকী নৌআন্দোলন ‘থাউজ্যান্ড ম্যাডলিনস’ এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় সমুদ্রযাত্রা বহরে রূপ নিয়েছে। বাংলাদেশের আলোচিত আলোকচিত্রী শহিদুল আলম এই ফ্লোটিলার সঙ্গে থাকা অবস্থায় তার ফেসবুক পোস্টে অভিযানটির তাৎপর্য ও সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরেছেন।
শহিদুল আলম জানিয়েছেন, সবচেয়ে বড় জাহাজ ‘কনসায়েন্স’ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ইটালির ওত্রান্তো থেকে যাত্রা শুরু করে। তারা দ্রুতগতিতে অগ্রসর হওয়ার পর ২ অক্টোবরের ভিতরে ইসরায়েলি বাহিনী সুমুদ ফ্লোটিলার বেশ কয়েকটি জাহাজ আটক করে। তিনি জানান, একটি জাহাজ প্রাথমিকভাবে আটক এড়াতে সক্ষম হলেও পরে সেটিও ইসরায়েলের দখলে চলে যায়।
শহিদুল আলম বলেন, “‘কনসায়েন্স’ ছাড়াও আরও আটটি নৌকা এবং ‘ফ্লোটিং ফ্রিডম’ কোয়ালিশনের দুটি জাহাজ বর্তমানে গাজা অভিমুখে রয়েছে। তবে তাদের অবস্থার সর্বশেষ খবর ফ্লোটের পক্ষ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কনসায়েন্স মাঝসমুদ্রে দ্রুতগতিতে অন্যদের সঙ্গে মিলিত হয় এবং পরে সিদ্ধান্ত নেয় সকলেই একসঙ্গে গাজার উদ্দেশ্যে এগোবে।”
তার ফেসবুক পোস্টে শহিদুল দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে লিখেছেন, “এ সম্মিলিত যাত্রাই আসলে জনগণের শক্তির বহিঃপ্রকাশ। যা-ই পরিকল্পনা করুক না কেন, ইসরায়েল এই মানবসাগরকে থামাতে পারবে না। যদি আমাদের আটকানো হয়, অন্যরা আসবে। ইতিহাসে কোনো স্বৈরশাসকই জনগণের শক্তির কাছে টিকে থাকতে পারেনি। ইসরায়েলও ব্যর্থ হবে। ফিলিস্তিন মুক্ত হবে।”
নৌআন্দোলনটি বিশ্বব্যাপী নাগরিক কর্মসূচির অংশ ফিলিস্তিনে চলমান হিংসা ও অবরোধ ভাঙার উদ্দেশ্য নিয়ে বিশ্ব নাগরিকরা নিজেদের উদ্যোগে সমুদ্র পথ দিয়ে সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টায় নেমেছেন। শহিদুল আলমের ভাষ্য অনুযায়ী, আন্দোলনটি যদিও প্রতীকী, তবুও এটি ভ্যাকুয়াম ভরাটের চেয়ে বেশি: লাখো মানুষের প্রতিচ্ছবি একযোগে সচেতনতা ও সহানুভূতির অভিব্যক্তি।
অভিযান সংক্রান্ত নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক জটিলতা রয়েছে সমুদ্রসীমানা, যুদ্ধজাহাজের বাধা এবং আন্তর্জাতিক নৌনীতির সীমার মধ্যে এই ধরনের ফ্লোটিলা পরিচালনা হওয়ায় ঝুঁকি স্বাভাবিকভাবেই বাড়ে। শহিদুলের পোস্টে বলা হয়েছে, তাদের গতিপথ ও অবস্থান সম্পর্কে চলমান পরিবর্তন ও প্রতিক্রিয়ার আলোকে পরবর্তী আপডেটগুলো অপেক্ষার বিষয়।
শহিদুল আলম, যিনি বাংলাদেশি পরিচয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃত আলোকশিল্পী, ফ্লোটিলার সঙ্গে থাকার সময় দেওয়া মন্তব্যে গণতান্ত্রিক প্রতিবাদ ও মানুষের একতার গুরুত্বকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি সতর্কতাসহও বলছেন এই জাতীয় আন্দোলনই শেষ পর্যায়ে আন্তর্জাতিক নৈতিক চাপ বাড়াতে পারে এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে সক্ষম হবে।
ফ্লোটিলার ভবিষ্যৎ কার্যক্রম, অংশগ্রহণকারী নৌযানের সুরক্ষা ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে এখনই নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না; তবে শহিদুল আলমের সরাসরি প্রত্যক্ষদর্শিতা এবং তাদের সংগ্রামের অনুপ্রেরণামূলক বার্তাই বর্তমানে সবচেয়ে সংবেদনশীল তথ্যসূত্র হিসেবে ধরা হবে।