Home Second Lead বিএনপিতে শুদ্ধি অভিযান: জিরো টলারেন্স নীতিতে বহিষ্কার ৫ হাজার নেতাকর্মী

বিএনপিতে শুদ্ধি অভিযান: জিরো টলারেন্স নীতিতে বহিষ্কার ৫ হাজার নেতাকর্মী

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ও ভাবমূর্তি রক্ষায় কঠোর অবস্থান নিয়েছে বিএনপি। দলের হাইকমান্ডের স্পষ্ট ঘোষণা—অপরাধে জড়িত কোনো নেতাকর্মীকেই ছাড় দেওয়া হবে না। ইতোমধ্যে সারা দেশে বিএনপি এবং এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের প্রায় পাঁচ হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দখল, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে চলছে শুদ্ধি অভিযান।

বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, সিনিয়র থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত নজরদারি চালানো হচ্ছে। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলেই সঙ্গে সঙ্গে বহিষ্কার করা হচ্ছে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “অপরাধ প্রমাণিত হলেই আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। এই নীতি আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।”

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপিকে দুর্বল করতে পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তার ভাষায়, “ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জনপ্রিয়তা এবং নেতৃত্বগুণই একটি মহলের ঈর্ষার কারণ হয়ে উঠেছে। তারেক রহমান অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতায় অল্প সময়েই বড় একটি অংশকে ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছেন।”

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কঠোর নির্দেশ রয়েছে—যে কোনো অপকর্মের বিরুদ্ধে দলের অবস্থান হবে জিরো টলারেন্স। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “অন্যায়কারী যতই প্রভাবশালী হোক, তাকে রেহাই দেওয়া হবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। অপরাধ দমনে যারা কাজ করবেন না, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”

সম্প্রতি মিটফোর্ড এলাকায় একজন ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী খুন হওয়ার ঘটনায় অঙ্গসংগঠনের অভিযুক্ত নেতাকর্মীদের আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানানো হয়েছে। বিএনপি বলছে, দলীয় নীতির বাইরে গিয়ে কেউ অপরাধ করলে তাকে দল থেকে ছাঁটাই করা হবে, সে যত বড় নেতা হোক না কেন।

অপরদিকে, সরকারের ব্যর্থতার জন্য দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতারা। তারা বলেন, বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনায় নেই, কিন্তু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের। অথচ সরকার তা করতে ব্যর্থ।

বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির বলেন, “সরকার যদি কোনো চাপে থাকে, তা জনগণকে জানাক। বিএনপি সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। কিন্তু অপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিলে তা বরদাস্ত করা হবে না।”

দলের নীতিনির্ধারকরা বলেন, ‘সবার আগে বাংলাদেশ’—এই স্লোগান নিয়ে তারেক রহমান দেশ পুনর্গঠনের স্বপ্ন দেখছেন। সেই স্বপ্নকে নস্যাৎ করতে কিছু রাজনৈতিক গোষ্ঠী মিথ্যাচার ও অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। তবে বিএনপি নেতাদের মতে, এসব অপপ্রচার তাদের দমাতে পারবে না। বরং শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার প্রতিজ্ঞা করছে দলটি।