Home আইন-আদালত রাজউকের প্লট দুর্নীতি: শেখ হাসিনার ২১ বছরের কারাদণ্ড

রাজউকের প্লট দুর্নীতি: শেখ হাসিনার ২১ বছরের কারাদণ্ড

শেখ হাসিনা।

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির দায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মোট তিনটি মামলায় তাকে এই সাজা প্রদান করা হয়েছে। একই মামলায় রাজউকের কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন এই রায় ঘোষণা করেন।

রায়ের বিবরণ
রায়ে বিচারক উল্লেখ করেন, তিনটি পৃথক দুর্নীতির মামলায় শেখ হাসিনাকে ৭ বছর করে মোট ২১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হলো। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, একটি মামলার সাজা ভোগ শেষ হওয়ার পর পরবর্তী মামলার সাজা শুরু হবে। অর্থাৎ, সাজাগুলো একসঙ্গে নয়, বরং পর্যায়ক্রমে কার্যকর হবে।

মামলার পটভূমি ও অভিযোগ
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে মোট ছয়টি মামলা দায়ের করে। তদন্ত শেষে সবকটি মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়। অভিযোগপত্রে বলা হয়, রাষ্ট্রক্ষমতার সর্বোচ্চ পদে থাকাকালে শেখ হাসিনা ক্ষমতার অপব্যবহার করে অসৎ উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রোডে ৬টি প্লট বরাদ্দ দেন। তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে যে, তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা এসব প্লট পাওয়ার যোগ্য ছিলেন না।

অন্যান্য আসামি ও বিচারিক কার্যক্রম
এর আগে গত ৩১ জুলাই, শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানার পরিবারের সাত সদস্যসহ মোট ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন আদালত। শেখ পরিবারের অন্য অভিযুক্তরা হলেন—শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক। শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যসহ মামলার ২২ জন আসামি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।

এই মামলায় অভিযুক্ত অন্যান্যদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন, জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা এবং রাজউকের বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।

গত ১০ নভেম্বর এ সংক্রান্ত তিনটি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। এরপর ২৩ নভেম্বর রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করেছিলেন। আত্মপক্ষ শুনানিতে অভিযুক্তদের মধ্যে খুরশীদ আলম নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছিলেন।

ইতিমধ্যে ছয়টি মামলার মধ্যে তিনটির বিচার কাজ সম্পন্ন হলো। বাকি মামলাগুলোর বিচারিক কার্যক্রম চলমান রয়েছে।