বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় দরিদ্র পরিবারের চার স্কুলছাত্রীকে আটকে রেখে ধারাবাহিক নির্যাতনের অভিযোগে এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (২৫ জুন) সকালে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার সাদেক খান রোড থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক মিজানুর রহমান মিজানকে আটক করে ফতুল্লা থানা পুলিশ। এ সময় তিন ভুক্তভোগী কিশোরীকেও উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার মিজানুর রহমান মিজান (৪৫) নারায়ণগঞ্জ সদরের পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক। তার বাড়ি বরিশালের আগৈলঝাড়ায়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তার বিরুদ্ধে ঢাকার এক থানায় এর আগেও পর্নোগ্রাফি ও ধর্ষণের মামলা রয়েছে।
মিজান সপ্তাহে একদিন পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ে আর্ট ও কম্পিউটার বিষয়ে ক্লাস নিতেন। ঢাকায় থাকতেন মোহাম্মদপুরের একটি ভাড়া বাসায়। অভিযোগ রয়েছে, তিনি দরিদ্র পরিবারের কিছু ছাত্রীকে উন্নত ভবিষ্যতের প্রলোভন দেখিয়ে নিজের বাসায় নিয়ে গিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন।
৬ জুন দশম শ্রেণির দুই ছাত্রীকে কৌশলে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে একাধিকবার নির্যাতন করেন মিজান। ১১ জুন আরও এক ছাত্রী এবং ২৩ জুন চতুর্থ আরেক ছাত্রীকে একই কায়দায় বাসায় নিয়ে নির্যাতন করেন তিনি। তাদের কারও বাবা দিনমজুর, কেউ ইটভাটার শ্রমিক, আবার কেউ ভাঙাড়ি বিক্রেতা। সহজ-সরল এই কিশোরীদের তিনি উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে নিজের বাসায় আটকে রাখেন।
এই ঘটনার মোড় ঘুরে যায় ২৪ জুন, যখন একটি কিশোরী মিজানের বাসা থেকে কৌশলে পালিয়ে আসে এবং পরিবারের কাছে সমস্ত ঘটনা খুলে বলে। সে অন্য তিন কিশোরীর পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করে। এরপর ফতুল্লা থানা পুলিশ ঘটনাটি জানতে পেরে মেয়েটিকে সঙ্গে নিয়ে বুধবার সকালে মোহাম্মদপুরে অভিযান চালায়। অভিযান শেষে তিন কিশোরীকে উদ্ধার ও অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে।
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন, অভিযুক্ত শিক্ষক মিজানের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করা হয়েছে এবং তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এই ঘটনার খবর জানাজানি হওয়ার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বহু মানুষ।