Home সারাদেশ নবীগঞ্জে পুলিশের ওপর হামলা: যৌথ অভিযানে আটক ১৩

নবীগঞ্জে পুলিশের ওপর হামলা: যৌথ অভিযানে আটক ১৩

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় পুলিশের ওপর সংঘবদ্ধ হামলা, সরকারি গাড়ি ভাঙচুর ও এজাহারভুক্ত আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এর জেরে সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশের যৌথ অভিযানে ১৩ জনকে আটক করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে আটজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (২৮ জুন) ভোররাতে নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ গজনাইপুর গ্রামে অভিযান চালায় পুলিশ। নবীগঞ্জ থানার ওসি শেখ মো. কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল আলোচিত একটি মামলার অন্যতম আসামি নজর উদ্দিনকে (৪০) গ্রেপ্তার করতে গেলে স্থানীয় মসজিদে “ডাকাত এসেছে” বলে মাইকিং করা হয়।

পরে প্রায় দুই শতাধিক গ্রামবাসী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয় এবং নজর উদ্দিনকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। হামলায় তিন পুলিশ সদস্য— কনস্টেবল শাহ ইমরান, মোজাম্মেল হক ও পল্টন চন্দ্র দাশ আহত হন। এ সময় পুলিশের একটি ভ্যানগাড়ি এবং দুটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাঙচুর করে হামলাকারীরা।

পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আতিকুল হক। এর পরের দিন, রবিবার (২৯ জুন) দুপুরে সেনাবাহিনীর বানিয়াচং ক্যাম্পের একটি দল, র‌্যাব ও নবীগঞ্জ থানার পুলিশ যৌথভাবে জনতার বাজার ও আশপাশের এলাকায় চিরুনি অভিযান চালায়। এ সময় ১৩ জনকে আটক করা হয়। যাচাই শেষে ৮ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন দক্ষিণ গজনাইপুর গ্রামের ইকবাল হোসেন (৩১), পিরোজপুর গ্রামের রোজেল মিয়া (২৫), দেওপাড়া গ্রামের কাইয়ুম মিয়া (২২), রামলোহ গ্রামের সোহেল আহমেদ (২৩), পানিউমদা গ্রামের আল আমিন (৬৬), শতক গ্রামের সাদেক মিয়া (৪২), দেওপাড়া গ্রামের পংকজ দত্ত (৪৩) এবং রামলোহ গ্রামের আবির আহমেদ জয় (১৯)।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বানিয়াচং সেনা ক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদ জানান, সেনাবাহিনী র‌্যাব ও পুলিশকে সহায়তা করেছে এবং আটক ব্যক্তিদের নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে নবীগঞ্জ থানার ওসি শেখ মো. কামরুজ্জামান বলেন, “আটকদের ব্যাপারে যাচাই-বাছাই চলছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার এ এন এম সাজেদুর রহমান বলেন, “এজাহারভুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তারের সময় পুলিশের ওপর সংঘবদ্ধ হামলার ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন এবং সরকারি যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। থানায় মামলা হয়েছে, অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।”

প্রসঙ্গত, গত ৩১ মে জনতার বাজার পশুর হাট সরানো নিয়ে ইউএনও রুহুল আমিনের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে বাধা দেওয়ার অভিযোগে একটি মামলা হয়, যাতে ৩৪ জনকে আসামি করা হয়। নজর উদ্দিন সেই মামলার অন্যতম আসামি ছিলেন।