Home First Lead খুলনায় বিএনপি নেতার কার্যালয়ে সন্ত্রাসী হামলা: মাদ্রাসা শিক্ষক নিহত

খুলনায় বিএনপি নেতার কার্যালয়ে সন্ত্রাসী হামলা: মাদ্রাসা শিক্ষক নিহত

নিহত ইমদাদুল হক
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, খুলনা: খুলনায় বিএনপি নেতার কার্যালয়ে ভয়াবহ গুলি ও বোমা হামলার ঘটনায় এক মাদ্রাসা শিক্ষক নিহত হয়েছেন। রোববার (২ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে খুলনা শহরের কুয়েট রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম ইমদাদুল হক (৪৮), তিনি বছিতলা নুরানি হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন।

এ ঘটনায় আরও তিনজন আহত হয়েছেন। তারা হলেন যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউপি সদস্য মামুন শেখ (৪৫), বেল্লাল খান (৫৫) এবং মিজানুর রহমান (৫৮)। আহতদের মধ্যে মামুন শেখ ও বেল্লাল খানকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যেখানে মামুনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাত ৯টার দিকে বিএনপি নেতা মামুন শেখ তার কার্যালয়ে কয়েকজন নেতা-কর্মীকে নিয়ে বৈঠক করছিলেন। এ সময় ইমদাদুল হক একটি মাহফিল আয়োজনের জন্য অনুদান সংগ্রহ করতে সেখানে যান। ঠিক তখনই মোটরসাইকেলে করে আসা কয়েকজন সন্ত্রাসী অফিসের সামনে এসে প্রথমে বোমা নিক্ষেপ করে, পরে গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ইমদাদুল, মামুন, বেল্লাল ও মিজানকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ইমদাদুল হককে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত ইমদাদুল হকের ছেলে অনিক, যিনি একজন মেডিকেল শিক্ষার্থী, বলেন, “আমার বাবা শুধু মাহফিলের জন্য সহযোগিতার টাকা তুলতে গিয়েছিলেন। তিনি এলাকার সবাইকে সাহায্য করতেন, কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না।” অনিক তার বাবার মৃত্যুর পর নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার অনিশ্চয়তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

খানজাহান আলী থানা বিএনপির সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান বলেন, “এই হামলা ছিল পরিকল্পিত। যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন শেখকে হত্যার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এতে একজন নিরীহ মাদ্রাসা শিক্ষক প্রাণ হারিয়েছেন। আমরা এর নিন্দা জানাই এবং দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি করছি।”

খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তুহিনুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “হামলায় এক মাদ্রাসা শিক্ষক নিহত এবং তিনজন আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে, তদন্ত চলছে।”

আড়ংঘাটা থানার ওসি খায়রুল বাসার জানান, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হামলাটি মামুন শেখকে লক্ষ্য করেই চালানো হয়। জড়িতদের শনাক্তে অভিযান শুরু হয়েছে।”

এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ ওই এলাকায় টহল জোরদার করেছে।