Home সারাদেশ ‘সরি’ না বলায় সুনামগঞ্জে চিকিৎসকের ওপর হামলা

‘সরি’ না বলায় সুনামগঞ্জে চিকিৎসকের ওপর হামলা

ছবি সংগৃহীত
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, সুনামগঞ্জ: শহরে রোগী দেখানোর সিরিয়াল নিয়ে তর্কের জেরে চিকিৎসককে ছুরিকাঘাত করার অভিযোগ উঠেছে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকাল ৪টায় হাছাননগরে অবস্থিত আনিসা হেলথকেয়ার এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত চিকিৎসক ডা. গোলাম রব্বানী সোহাগ বর্তমানে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর মাথা ও পিঠে একাধিক ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

আহতের সহকর্মী ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের ভাষ্যমতে, অভিযুক্ত ব্যক্তি রায়হান উদ্দিন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এবং তার সঙ্গে ছিলেন ছাত্রদল নেতা শাহনেওয়াজ মুবিন। মঙ্গলবার বিকেলে রায়হান উদ্দিন তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে আলট্রাসনোগ্রাম করাতে ক্লিনিকে আনেন। সিরিয়াল ভেঙে দ্রুত আলট্রাসনোগ্রাম করার জন্য চিকিৎসককে চাপ দিলে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। পরে ক্লিনিক মালিকপক্ষের হস্তক্ষেপে আলট্রাসনোগ্রাম সম্পন্ন হয় এবং রায়হান স্ত্রীকে বাসায় পাঠিয়ে দেন।

ক্লিনিকের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, বিকাল ৪টা ৩ মিনিটে রায়হান ও মুবিন আলট্রাসনোগ্রাম কক্ষে প্রবেশ করেন। এরপর হঠাৎ চিৎকার-চেঁচামেচির শব্দে অন্যান্য রোগী ও স্বজনেরা দৌঁড়ে ক্লিনিক থেকে বেরিয়ে আসেন।

ক্লিনিকের এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, অভিযুক্তরা চিকিৎসককে ‘সরি’ বলতে বলেন। চিকিৎসক তাতে অসম্মতি জানালে তাঁকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করা হয়। এমনকি দেয়ালে আঘাত করে তাঁকে গুরুতর জখম করা হয়। তখন কক্ষে ছিলেন একজন অন্তঃসত্ত্বা রোগী ও একজন কর্মচারী। দরজা ভেতর থেকে আটকানো থাকায় রোগী নিজেই দরজা খুলে বাইরে গিয়ে সাহায্য চান। এরপর ক্লিনিক মালিক ও অন্যান্যরা এসে আহত চিকিৎসককে উদ্ধার করেন।

ক্লিনিকের অন্যতম মালিক শামসুল আলম জুয়েল বলেন, “আমি নিজ চোখে দেখেছি রায়হান ও তার সঙ্গী চিকিৎসকের ওপর হামলা চালাচ্ছেন। আমরা বহু কষ্টে তাদের হাত থেকে চিকিৎসককে উদ্ধার করি। তারা দুটি কম্পিউটারও ভেঙে ফেলেছে।”

এ বিষয়ে রায়হান উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মুনাজ্জির হোসেন বলেন, “ঘটনাটি দুঃখজনক। এটি তাঁর ব্যক্তিগত আচরণ। আমরা বিষয়টি কেন্দ্রীয় কমিটিকে জানিয়েছি। সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।”

সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম বলেন, “আমরা খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যাই এবং অভিযান শুরু করি। অভিযুক্তদের ধরতে চেষ্টা চলছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

 

📢 শেয়ার করুন:
প্রতিটি সচেতন কণ্ঠ পারে অন্যায় প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে। প্রতিবেদনটি শেয়ার করে অন্যদেরও জানার সুযোগ দিন।