আসামি স্বাধীন গ্রেপ্তার, হত্যার দায় স্বীকার
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, গাজীপুর: গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে কুপিয়ে হত্যা মামলার অন্যতম আসামি স্বাধীন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় গাজীপুরের পোড়াবাড়ী ক্যাম্পে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-১-এর কোম্পানি কমান্ডার কে এম এ মামুন খান চিশতী।
তিনি বলেন, তুহিন হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত স্বাধীনকে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে শনাক্ত করা হয়। পরে গাজীপুর মহানগরীর শিববাড়ি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তিনি ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন এবং হত্যায় নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন।
মামুন খান চিশতী বলেন, রাতভর জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন স্বাধীন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন—একটি ছিনতাইয়ের ভিডিও ধারণ করার কারণে তুহিনকে হত্যা করা হয়। ঘটনার সময় চক্রের নারী সদস্য বাদশাহ নামের এক ব্যক্তিকে বিরক্ত করছিলেন। বাদশাহ ওই নারীকে আঘাত করলে চক্রের বাকি সদস্যরা ছুরি নিয়ে তাকে ধাওয়া করে। বিষয়টি দেখে ভিডিও করছিলেন তুহিন। ভিডিও করার বিষয়টি টের পেয়ে চক্রের সদস্যরা তার ওপর হামলা চালায়।
তিনি আরও বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ ও আসামির স্বীকারোক্তি থেকে প্রাথমিকভাবে হত্যার এই কারণ পাওয়া গেছে। তবে তদন্তে বিস্তারিত তথ্য উঠে আসবে।
দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার গাজীপুর স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান তুহিনকে গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে গাজীপুর মহানগরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার একটি মার্কেটের ভিতরে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার রবিউল ইসলাম জানান, হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত পাঁচজনকে শুক্রবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন—ফয়সাল ওরফে কেটু মিজান, তার স্ত্রী গোলাপী বেগম, স্বাধীন, আল আমিন ও সুমন। ফয়সালসহ তিনজনকে গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর এলাকা থেকে, আল আমিনকে ঢাকার তুরাগ এলাকা থেকে এবং স্বাধীনকে হোতাপাড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে মামলার অন্য দুই আসামি পাবনার পাঁচবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা মো. ফয়সাল হাসান (২৩) এবং কুমিল্লার হোমনা থানার বাসিন্দা মো. শাহ জালালকে (৩২) ময়মনসিংহের গফরগাঁও থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া সবার বিরুদ্ধেই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে। এ হত্যার একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়, যেখানে হত্যাকারীদের স্পষ্টভাবে চেনা যায়। ফুটেজ অনুযায়ী, হত্যায় অংশ নেয় গ্রেপ্তার হওয়া সাতজনই।
এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে গাজীপুরের সাংবাদিক সমাজসহ স্থানীয় জনসাধারণ গভীর শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।